প্রতিনিধি ২০ অগাস্ট ২০২৫ , ১০:২০ এএম প্রিন্ট সংস্করণ
দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে সরকার সম্প্রতি এক বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির এক বৈঠকে ৩ কার্গো এলএনজি, ২ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন সার এবং ১৫ হাজার মেট্রিক টন রক সালফার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত দেশের জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এ বছরের ৩২তম সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি জানান, জ্বালানির দাম বারবার বাড়ানোর জন্য সরকারের ওপর যে চাপ ছিল, তা মোকাবিলা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আপাতত দাম না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা একটি ইতিবাচক দিক।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো এলএনজির সরবরাহ নিশ্চিত করা, যাতে জ্বালানির দাম বাড়ানোর জন্য নতুন করে কোনো চাপ তৈরি না হয়।” তিনি আরও বলেন, এই ধরনের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ গ্রাহক থেকে শুরু করে শিল্প-কারখানা পর্যন্ত সবার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তিনি আশ্বস্ত করেন যে সরকার তুলনামূলকভাবে যুক্তিসঙ্গত মূল্যে এলএনজি আমদানি করছে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাব অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যুক্তরাজ্য থেকে ৩ কার্গো এলএনজি কেনা হবে। মেসার্স টোটাল এনার্জিজ গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেডের কাছ থেকে কেনা এই এলএনজির মূল্য প্রতি এমএমবিটিইউ-তে যথাক্রমে ১১.৪৪, ১১.৩৪ এবং ১১.৫৪ মার্কিন ডলার পড়বে।
এই ক্রয় চুক্তিগুলো দেশের গ্যাস সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে এবং শিল্প-কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
একই বৈঠকে শিল্প ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের পৃথক প্রস্তাবের ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ২ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন সার কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সারগুলো দেশের কৃষিখাতের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়াও, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী, ৭১ কোটি ৪২ লাখ ৬৪ হাজার ৭৫ টাকায় ১৫ হাজার মেট্রিক টন রক সালফার বা ব্রাইট ইয়েলো সালফার কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই পণ্যটি শিল্প-কারখানার জন্য একটি অপরিহার্য কাঁচামাল।
এই সমন্বিত ক্রয় পরিকল্পনা সরকারের পক্ষ থেকে দেশের জ্বালানি, কৃষি ও শিল্প খাতের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার একটি সুস্পষ্ট বার্তা বহন করে। এই পদক্ষেপগুলো দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।