রাজনীতি

গণতন্ত্রের পথে জামায়াতের নতুন বার্তা: জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি কার্যকরের দাবি

  প্রতিনিধি ২০ অগাস্ট ২০২৫ , ১০:১০ এএম প্রিন্ট সংস্করণ

গণতন্ত্রের পথে জামায়াতের নতুন বার্তা: জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি কার্যকরের দাবি

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সম্প্রতি দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি কার্যকর করার জোর দাবি জানানো হয়েছে। জামায়াতের শীর্ষ নেতারা মনে করেন, এই সনদের ভিত্তিতেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত, যা দেশকে গণতন্ত্রের পথে উত্তরণে সাহায্য করবে।

গতরাতে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। সভায় ঐকমত্য কমিশন কর্তৃক সরবরাহকৃত জুলাই জাতীয় সনদের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। আলোচনার পর এই সনদের কিছু বিষয় নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সাথে সরাসরি আলোচনার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে জামায়াত নেতারা প্রেসিডেন্টশিয়াল প্রক্লেমেশন অথবা গণভোটের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তাদের মতে, এটি একটি জরুরি পদক্ষেপ, যা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করবে এবং নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করে তুলবে।

ঐকমত্য কমিশনের জুলাই জাতীয় সনদটি দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার একটি প্রচেষ্টা। এটি মূলত রাজনৈতিক সংকট নিরসনে এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করার জন্য প্রণীত হয়েছে। জামায়াতের এই দাবি সেই প্রক্রিয়ায় একটি নতুন মাত্রা যোগ করল।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের (সাবেক এমপি), মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম (সাবেক এমপি), সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার (সাবেক এমপি), সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, অ্যাডভোকেট মোয়াযযম হোসাইন হেলাল ও অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। এছাড়াও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব আবদুর রব, সাইফুল আলম খান মিলন, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ, মোবারক হোসাইন ও মো. সেলিম উদ্দিনও উপস্থিত ছিলেন।

দীর্ঘ আলোচনার পর জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্ব এই মর্মে একমত হন যে, জুলাই জাতীয় সনদ কার্যকর হলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে এবং জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে। এই দাবি যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হতে পারে। এখন দেখার বিষয়, জামায়াতের এই আহ্বানে অন্তর্বর্তী সরকার বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে সাড়া দেয়।