রাজনীতি

তারেক রহমানের কড়া বার্তা: গণতন্ত্রকামীদের মধ্যে বিভেদ ফ্যাসিবাদকে ফিরিয়ে আনবে

  প্রতিনিধি ২০ অগাস্ট ২০২৫ , ১০:০৬ এএম প্রিন্ট সংস্করণ

তারেক রহমানের কড়া বার্তা: গণতন্ত্রকামীদের মধ্যে বিভেদ ফ্যাসিবাদকে ফিরিয়ে আনবে

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তায় সতর্ক করে বলেছেন, গণতন্ত্রপন্থী দলগুলোর মধ্যে যদি দূরত্ব বা বিভেদ তৈরি হয়, তাহলে পলাতক ফ্যাসিস্ট চক্রের পুনর্বাসন বা ফিরে আসার পথ সহজ হয়ে যাবে। তিনি গণতন্ত্রকামী জনগণের প্রতি এই বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। গত সোমবার রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।

স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এই সভায় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল আহসান তার সাংগঠনিক প্রতিবেদন তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলনসহ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।

তারেক রহমান বলেন, নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমাদের কিছু সহযোদ্ধা রাজনৈতিক দলের বা তাদের সদস্যদের বক্তব্যে গণতন্ত্রকামী জনগণের মনে নানা জিজ্ঞাসার জন্ম দিয়েছে। তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির মধ্যে বিভেদ দূর করার বার্তা দিয়ে বলেন, ১৯৭১ সাল ছিল স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ, আর ২০২৪ সাল হলো স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ। হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ইতিহাসের নৃশংসতম এক ফ্যাসিস্টের পদত্যাগ ও পলায়নের পর এখন ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক শক্তি নিজেদের মধ্যে নতুন নতুন ইস্যু নিয়ে অহেতুক বিতর্কে লিপ্ত হচ্ছে, যা শহীদদের আত্মত্যাগের অবমাননার শামিল। তিনি জোর দিয়ে বলেন, একটি গণতান্ত্রিক ও ইনসাফভিত্তিক দেশ গড়ার মাধ্যমেই শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করা এখন সময়ের দাবি।

কথার রাজনীতি বাদ দিয়ে কাজের রাজনীতিতে মনোযোগ দেওয়ার ওপর জোর দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে চাইলে আমাদের প্রচলিত ধারার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা কিংবা শুধু কথা বলার রাজনীতির পরিবর্তে বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রচলিত রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন ঘটাতে হবে।

তিনি বিএনপির আগামী দিনের রাজনীতি কেমন হবে, সে বিষয়ে আলোকপাত করে বলেন, বিএনপির আগামী দিনের রাজনীতি হবে জনগণের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতি। সেটি দেশের ভেতরে হোক, কিংবা বিদেশে হোক—কর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকেই আমাদের মূল লক্ষ্য থাকবে। সেই সঙ্গে একটি নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করাও আমাদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। তারেক রহমানের এই বার্তা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছে এবং গণতন্ত্রপন্থী দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তাকে আরও একবার সামনে এনেছে।