রাজনীতি

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকার বহিষ্কার

  প্রতিনিধি ১৯ অগাস্ট ২০২৫ , ১০:৪১ এএম প্রিন্ট সংস্করণ

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকার বহিষ্কার

সোমবার রাতে এক আকস্মিক ঘোষণায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকারকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে এনসিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। দলের যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

দলীয় বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দলের আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নির্দেশক্রমে মাহিন সরকারকে তার পদ ও দায়িত্ব থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো। এই বহিষ্কার আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়েছে। এই ঘটনা রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে যখন মাহিন সরকার নিজেই একটি টিভি চ্যানেলের টকশোতে অংশগ্রহণকালে তার বহিষ্কারের খবর জানতে পারেন।

ঘটনাটি ঘটে যখন মাহিন সরকার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে আয়োজিত টকশোতে অংশ নিয়েছিলেন। টকশো চলাকালীন উপস্থাপকের মাধ্যমেই তিনি প্রথমবার জানতে পারেন যে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই আকস্মিক খবরটি শুনে তিনি কিছুটা হতবাক হন।

টকশোতে বহিষ্কারের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে মাহিন সরকার বলেন, “আমি আসলে বহিষ্কারের কারণটি জানি না। আপনার (টকশো উপস্থাপক) কাছেই প্রথম শুনলাম যে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন যে, জাতীয় নাগরিক পার্টি তার রাজনৈতিক দল এবং ভবিষ্যতে এই দলেই থাকার ইচ্ছা রয়েছে। তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে এই বিষয়ে আলোচনাও করেছেন।

মাহিন সরকার তার বক্তব্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “যেহেতু আমার এখনও ছাত্রত্ব আছে এবং আমি বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী, এই জায়গা থেকে আসলে দলের নীতি কী, তা আমি দলের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে কোনো সুস্পষ্ট উত্তর পাইনি। তাদের জবাবে এটি মূলত ছাত্র রাজনীতি হয়ে যায়।” তিনি আরও জানান, “কোন গ্রাউন্ডে বা কোন নীতির আলোকে আমি সেখানে যেতে পারব না, সে বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা আমি পাইনি।”

তিনি মনে করেন, দল যদি এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিত, তাহলে বিষয়টি পরিষ্কার হতো। মাহিন সরকার নিশ্চিত করেন যে দল তার কাছে কৈফিয়ত চেয়েছিল এবং তিনি সরাসরি তাদের কাছে তার জবাবও দিয়েছেন। এরপরও কেন তাকে বহিষ্কার করা হলো, তা তার কাছে পরিষ্কার নয়।

এই আকস্মিক বহিষ্কারের ঘটনা এনসিপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো বিশদ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি, যা বিভিন্ন মহলে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এটি কি কেবলই দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনা, নাকি এর পেছনে আরও কোনো গভীর রাজনৈতিক কারণ রয়েছে—তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে। মাহিন সরকারের মতো একজন তরুণ এবং সক্রিয় নেতাকে এভাবে হঠাৎ বহিষ্কার করা দলের ভবিষ্যতের জন্য কী বার্তা বহন করে, তা সময়ই বলে দেবে।