রাজনীতি

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশি কূটনীতি: পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে খালেদা জিয়ার সৌজন্য সাক্ষাৎ

  প্রতিনিধি ২৫ অগাস্ট ২০২৫ , ৯:০৪ এএম প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশি কূটনীতি: পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে খালেদা জিয়ার সৌজন্য সাক্ষাৎ

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর কূটনৈতিক তৎপরতা নতুন মাত্রা পেয়েছে। সাম্প্রতিককালে ঢাকা সফররত পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এই সাক্ষাৎ দেশের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত বেগম জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’য় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকটি মূলত সৌজন্যমূলক ছিল। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং তার সুস্থতা কামনা করেন। প্রায় ৪৫ মিনিট স্থায়ী এই সাক্ষাতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার সম্পর্ক এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে, বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে বিস্তারিত কোনো আলোচনা হয়নি।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। এ সময় ইসহাক দারের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত ইমরান হায়দারও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন যে, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী এবং সেদেশের জনগণের পক্ষ থেকে বেগম জিয়ার জন্য শুভেচ্ছা বার্তা নিয়ে এসেছেন ইসহাক দার।

জাহিদ হোসেন আরও জানান, খালেদা জিয়া দীর্ঘকাল ধরে অসুস্থ। এই অসুস্থতা নিয়েই তারা কুশল বিনিময় করেছেন। বৈঠকের এক পর্যায়ে খালেদা জিয়া পাকিস্তানের বন্যা পরিস্থিতি নিয়েও জানতে চান। দুই দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক এবং সার্ক নিয়ে স্মৃতিচারণও হয়েছে।

এই সৌজন্য সাক্ষাতে দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়েও কথা হয়। জাহিদ হোসেন জানান, ভবিষ্যতে দুই দেশের মানুষের সম্পর্ক আরও স্বাভাবিক করা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন যে, বাংলাদেশ একটি সুন্দর রাজনৈতিক পরিবেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলটি এগিয়ে যাচ্ছে এবং আগামী দিনে নেতৃত্ব দেবে।

এই ধরনের কূটনৈতিক তৎপরতা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিদেশিদের আগ্রহের প্রতিফলন। এটি দেশের প্রধান বিরোধী দলের প্রতি বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর কূটনৈতিক গুরুত্বের ইঙ্গিত দেয়। এই সাক্ষাৎকে ঘিরে রাজনৈতিক মহল এবং জনসাধারণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে এই বৈঠককে দুই দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক উন্নয়নের একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। আবার কেউ কেউ এর রাজনৈতিক তাৎপর্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তবে, সার্বিকভাবে বলা যায়, এই ধরনের কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনা দেশের রাজনৈতিক আবহাওয়ায় নতুন গতি সঞ্চার করেছে।