প্রতিনিধি ১১ অগাস্ট ২০২৫ , ৭:০৭ পিএম প্রিন্ট সংস্করণ
যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের দীর্ঘ ও ফলপ্রসূ আলোচনার পর বড় সাফল্য এসেছে। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের ওপর ৩৭% ট্যারিফ আরোপ করা হলেও, সরকারের ধারাবাহিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে ২০% করা হয়েছে। যদিও সরকার এই ফলাফলে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয়, তবুও এটি বাংলাদেশের জন্য একটি ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
রোববার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় গুলশান ক্লাব লিমিটেডে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান এই সাফল্যের কথা জানান। তিনি বলেন, আমেরিকা মোট ১৫৪টি দেশের বিরুদ্ধে এই ট্যারিফ ঘোষণা করেছিল, যার মধ্যে বাংলাদেশও অন্তর্ভুক্ত ছিল। ট্যারিফ ঘোষণার পরপরই সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেয় এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন, পেশাজীবী এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি-এর মতামত নিয়ে আলোচনার কৌশল নির্ধারণ করে।
বাণিজ্যসচিব আরও বলেন, আমেরিকার সঙ্গে চার ধাপের আলোচনার মাধ্যমে এই সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। তিনি এই প্রক্রিয়ায় বিটিএমএ এবং বিজিএমইএ-এর মতো ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর অকুণ্ঠ সমর্থনের প্রশংসা করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে ভবিষ্যতে এমন সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে আরও ভালো ফল অর্জন করা সম্ভব হবে। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, সরকার সবসময় ব্যবসায়ীদের পাশে আছে এবং দেশের বাণিজ্য ও উন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এই আলোচনায় সাফল্যের পেছনে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ এবং সঠিক কৌশল নির্ধারণের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনায় তেমন অগ্রগতি হয়নি, সেখানে বাংলাদেশের এই সাফল্য নিঃসন্দেহে একটি বড় অর্জন। এটি কেবল বর্তমানের বাণিজ্য সম্পর্ককেই শক্তিশালী করবে না, বরং ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়াবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ডব্লিউটিও অনুবিভাগের প্রধান ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী, বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, এবং বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান। উপস্থিত অতিথিরা সরকারের এই সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
গ্লোবাল অর্থনীতির বর্তমান প্রেক্ষাপটে এমন একটি সাফল্য দেশের রপ্তানি খাতের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক। এটি আমাদের পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্পকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করবে।