প্রতিনিধি ২৬ অগাস্ট ২০২৫ , ১০:১৫ এএম প্রিন্ট সংস্করণ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আবারও বড় ধরনের রদবদলের ঘোষণা দিয়েছে। সম্প্রতি এনবিআরের চার কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে, যা নিয়ে রাজস্ব প্রশাসনে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। রবিবার এনবিআরের কাস্টমস ও ভ্যাট প্রশাসন-১ শাখা থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এই বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এই প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন দ্বিতীয় সচিব মোহাম্মদ আবুল মনসুর।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মুশফিকুর রহমানকে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে বদলি করা হয়েছে। অন্যদিকে, কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মিলন শেখকে বদলি করা হয়েছে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে।
এছাড়া, রাজশাহী কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের যুগ্ম কমিশনার চপল চাকমাকে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরে এবং চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের উপ কমিশনার অনুরুপা দেবকে চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটে বদলি করা হয়েছে।
এই বদলির আদেশকে ‘জনস্বার্থে’ জারি করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। একই সাথে, বদলি হওয়া কর্মকর্তাদের যোগদানপত্রের একটি অনুলিপি এনবিআরের কাস্টমস ও ভ্যাট প্রশাসন-১ শাখায় প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই বদলিকে ঘিরে একটি প্রশ্ন সামনে এসেছে – এটি কি এনবিআরের অভ্যন্তরে চলা সাম্প্রতিক আন্দোলনের ফল? গত মে-জুন মাসে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একটি বড় আন্দোলনে নামেন। নতুন রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাদেশ জারির প্রতিবাদে এবং যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে তারা প্রায় দেড় মাস ধরে কর্মবিরতি পালন করেন। ২৮ ও ২৯ জুন দেশব্যাপী কাজ বন্ধ রাখার পর ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার হলেও এরপর থেকে নিয়মিতভাবে কর্মকর্তাদের শাস্তিমূলক বদলি শুরু হয়।
এই আন্দোলনের পর থেকে এখন পর্যন্ত কয়েকশ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায়, গত ১৮ ও ১৯ আগস্ট একযোগে ৪১ জন অতিরিক্ত কর কমিশনার এবং ১৩১ জন সহকারী কর কমিশনারকে বদলি করা হয়েছিল। এই বিপুল সংখ্যক বদলির পর এই নতুন চার কর্মকর্তার বদলিকে অনেকেই চলমান শাস্তিমূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে দেখছেন।
আন্দোলন প্রত্যাহার হলেও তার প্রভাব যে এখনও চলমান, এই বদলি তারই একটি ইঙ্গিত। এনবিআরের ভেতরের এই রদবদল রাজস্ব প্রশাসনে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এটি স্পষ্ট যে, এই ঘটনাগুলো এনবিআরের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায় একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করছে।