প্রতিনিধি ৯ অগাস্ট ২০২৫ , ৯:১৮ এএম প্রিন্ট সংস্করণ
এলন মাস্কের মালিকানাধীন এক্সএআইয়ের গ্রোক এআইয়ের বিরুদ্ধে পপ তারকা টেলর সুইফটের ডিপফেক ভিডিও তৈরির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট দ্য ভার্জের এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, গ্রোকের নতুন ‘স্পাইসি’ মোড ব্যবহার করে বিনা অনুমতিতে টেলর সুইফটের অশ্লীল ভিডিও তৈরি করা হয়েছে। সাইবার বিশেষজ্ঞরা এটিকে একটি পরিকল্পিত নারীবিদ্বেষী ঘটনা হিসেবে দেখছেন, কোনো আকস্মিক ভুল নয়।
ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ক্লেয়ার ম্যাকগ্লিন মন্তব্য করেছেন, ‘এটা আকস্মিক কোনো ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত নারীবিদ্বেষ।’ তিনি পর্নোগ্রাফির ডিপফেক নিষিদ্ধ করার আইন প্রণয়নের খসড়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ম্যাকগ্লিন মনে করেন, এমন কন্টেন্ট তৈরি হওয়া প্রমাণ করে যে এআই প্রযুক্তির ভেতরে এখনো নারীবিদ্বেষী পক্ষপাত গেঁথে আছে। তিনি আরও বলেন, প্ল্যাটফর্মটি চাইলে এটা ঠেকাতে পারত, কিন্তু তারা সচেতনভাবেই তা করেনি। এক্সএআইয়ের নিজস্ব নীতিমালায় কারো অবয়ব পর্নোগ্রাফিকভাবে উপস্থাপন করা নিষিদ্ধ হলেও এই ঘটনা সেই নীতির স্পষ্ট লঙ্ঘন।
দ্য ভার্জের সাংবাদিক ওয়েদারবেড তার প্রতিবেদনে জানান, তিনি গ্রোক ইমাজিনের পেইড সংস্করণ ব্যবহার করে একটি স্থিরচিত্র থেকে টেলর সুইফটের অশ্লীল ভিডিও তৈরি করেছেন। তিনি চারটি অপশনের মধ্যে ‘স্পাইসি’ মোড নির্বাচন করতেই এআই কোনো নির্দেশনা ছাড়াই টেলর সুইফটের পোশাক খুলে ফেলার ও নাচ শুরু করার ভিডিও তৈরি করে। ওয়েদারবেড জানান, তিনি ৩০ পাউন্ড দিয়ে গ্রোকের পেইড সংস্করণ কিনেছিলেন এবং কোনো বয়স যাচাই ছাড়াই এটি ব্যবহার করতে পেরেছিলেন। এটি যুক্তরাজ্যের জুলাই থেকে কার্যকর হওয়া বয়স যাচাইয়ের বাধ্যতামূলক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন।
এটিই প্রথমবার নয় যে টেলর সুইফটের মুখমণ্ডল এমনভাবে ব্যবহার করা হলো। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতেও তার মুখ ব্যবহার করে অশ্লীল ডিপফেক ভিডিও এক্স এবং টেলিগ্রামে ভাইরাল হয়েছিল। সেসময় এক্স সাময়িকভাবে টেলর সুইফটের নাম সার্চ করা বন্ধ করে দেয় এবং সংশ্লিষ্ট কন্টেন্ট ও অ্যাকাউন্টগুলো মুছে ফেলার কথা জানায়। নতুন এই ঘটনা নিয়ে এক্সএআই বা টেলর সুইফটের মুখপাত্র কেউই এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেননি। অধ্যাপক ম্যাকগ্লিনের মতো বিশেষজ্ঞদের দাবি, এ ধরনের অননুমোদিত ডিপফেক তৈরি আইনগতভাবে অপরাধ হিসেবে গণ্য হওয়া উচিত, যা ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে সহায়ক হবে।