প্রতিনিধি ১৯ অগাস্ট ২০২৫ , ১:১২ পিএম প্রিন্ট সংস্করণ
এশিয়া কাপের সূচি ঘোষণা হয়েছে অনেক আগেই। এই টুর্নামেন্টে ভারত ও পাকিস্তানের হাই-ভোল্টেজ ম্যাচের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। তবে সম্প্রতি এমন একটি বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, যা পুরো ম্যাচের ভবিষ্যৎকেই অনিশ্চিত করে তুলেছে। প্রশ্ন উঠেছে—এশিয়া কাপে কি ভারত সত্যিই পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে? এই প্রশ্নটি আরও জোরালো হয়েছে যখন ভারতের বেশ কয়েকজন সাবেক ক্রিকেটার এই ম্যাচ বয়কটের পক্ষে মত দিয়েছেন।
কিছুদিন আগে শেষ হওয়া ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লিজেন্ডস (WCL) টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্ব এবং সেমিফাইনালে ভারত চ্যাম্পিয়নস দল পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নসের বিপক্ষে খেলতে রাজি হয়নি। ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হওয়া হামলার প্রতিবাদে ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররা এই সিদ্ধান্ত নেন। যদিও এই টুর্নামেন্টটি আইসিসি বা এসিসি-র অনুমোদনপ্রাপ্ত ছিল না, তবুও এই ঘটনাটি ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেটীয় সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার কেদার যাদব এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন ভারত এশিয়া কাপেও পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে না। তিনি বলেন, “আমার মনে হয় না ভারতের এই ম্যাচ খেলা উচিত। পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারত যেখানেই খেলুক, জিতবেই। কিন্তু এই ম্যাচটা একেবারেই হওয়া উচিত নয়। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, ম্যাচটা হবে না।”
যাদবের মতো একই মতামত পোষণ করেন ভারতের আরেক সাবেক ক্রিকেটার হরভজন সিং। তিনি টাইমস অব ইন্ডিয়া-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “যত দিন দুই দেশের মধ্যে বিবাদের সুরাহা না হবে, আমাদের ক্রিকেট খেলা উচিত নয়। এটা আমার মতামত। একটি জাতির তুলনায় ক্রিকেট খুব ছোট বিষয়।”
তবে এই বিতর্কের মধ্যে ভিন্ন সুর শোনা গেছে ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীর কণ্ঠে। তিনি মনে করেন, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ সম্পূর্ণভাবে সরকারের অনুমতির ওপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, “ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ সব সময়ই সরকারের অনুমতির ওপর নির্ভর করে। সরকার যদি অনুমতি দেয়, ম্যাচটা হবে। তবে সরকার যদি অনুমতি দেয়, তাহলে খেলা চালিয়ে যাওয়া উচিত।” এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।
এদিকে, পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার বাসিত আলী এই বিষয়ে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে মন্তব্য করেছেন। তিনি তার ইউটিউব চ্যানেলে বলেন, “আমি দোয়া করি, এশিয়া কাপে ভারত যেন আমাদের বিপক্ষে খেলতে অস্বীকৃতি জানায়। তারা এত মার দেবে যে তা ভাবাও যায় না।” তার এই মন্তব্য কিছুটা উপহাসের ভঙ্গিতে করা, যা বোঝায় যে তিনি বিশ্বাস করেন ভারত ম্যাচটি বয়কট করলে তা পাকিস্তানের জন্যই ভালো হবে।
এশিয়া কাপে ভারত ও পাকিস্তানের গ্রুপ পর্বের ম্যাচটি আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। যদি দুই দলই টুর্নামেন্টে ভালো খেলে, তাহলে ফাইনালসহ মোট তিনবার তাদের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে ম্যাচটি আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। ক্রিকেটপ্রেমীরা এখন তাকিয়ে আছেন রাজনৈতিক এবং ক্রিকেট বোর্ডের সিদ্ধান্তের দিকে, যা ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করবে।