রাজনীতি

গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতা শরীফুল ইসলাম, নিষিদ্ধ কার্যক্রমের অভিযোগে কঠোর ব্যবস্থা

  প্রতিনিধি ১৯ অগাস্ট ২০২৫ , ১০:০৯ এএম প্রিন্ট সংস্করণ

গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতা শরীফুল ইসলাম, নিষিদ্ধ কার্যক্রমের অভিযোগে কঠোর ব্যবস্থা

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এবং ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এফ এম শরীফুল ইসলামকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি বিশেষ অভিযানে সোমবার বিকেলে ওয়ারী থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সিটি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন এই অভিযান পরিচালনা করে। ডিএমপি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সোমবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে ওয়ারী থানা এলাকায় এই বিশেষ অভিযান চালানো হয়।

শরীফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আওয়ামী লীগে তার পদাধিকার ব্যবহার করে অবৈধ এবং নিষিদ্ধ কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন। এই কর্মকাণ্ডগুলো রাষ্ট্রের নিরাপত্তা এবং জনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছিল বলে জানানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে অবৈধ অর্থপাচার, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন এবং সাইবার অপরাধের মাধ্যমে গুজব ছড়ানো। এই গুরুতর অভিযোগগুলোর ভিত্তিতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিএমপি সূত্র জানায়, সিটিটিসির কর্মকর্তারা গোপন সূত্রে খবর পান যে শরীফুল ইসলাম ওয়ারী থানা এলাকায় অবস্থান করছেন। এই তথ্যের ভিত্তিতেই দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হয়। গ্রেপ্তার করার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিটিটিসি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে আরও কিছু অভিযান পরিচালনা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ।

শরীফুল ইসলামের গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দলের একজন প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। দলের অভ্যন্তরে তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই গ্রেপ্তারের পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দ্রুত একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, যেখানে জানানো হয়েছে যে দল কোনো ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করে না এবং আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব এই ঘটনার পর দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তারা জানিয়েছে যে দলের মধ্যে যারা এই ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর মাধ্যমে দল তার স্বচ্ছতা এবং সততার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।

শরীফুল ইসলামের এই গ্রেপ্তারের ঘটনা রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বিশ্লেষকরা এই ঘটনাকে সরকারের একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। তারা মনে করছেন, সরকার দুর্নীতি এবং অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। এই ঘটনা থেকে বোঝা যায় যে কেউ যতই ক্ষমতাশালী হোক না কেন, আইন সবার জন্য সমান।

শরীফুল ইসলামের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাকে আদালতে হাজির করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হবে। এই মামলার তদন্তের মাধ্যমে তার অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য সামনে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এই ঘটনা সমাজের সকল স্তরে একটি বার্তা পৌঁছে দিয়েছে যে অপরাধী যেই হোক না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।