জাতীয়

ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা! বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, ৪ বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত

  প্রতিনিধি ১৪ অগাস্ট ২০২৫ , ১:০৮ পিএম প্রিন্ট সংস্করণ

ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা! বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, ৪ বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে বাংলাদেশের চারটি প্রধান সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং দক্ষিণ উড়িষ্যা উপকূলের কাছে পশ্চিম-মধ্য এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই লঘুচাপটি বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চল এবং সমুদ্রবন্দরগুলোতে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, লঘুচাপের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্য দেখা দিয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। এই অবস্থায়, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা এবং পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে, যা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার ইঙ্গিত বহন করে। এই সতর্ক সংকেতটি স্থানীয় বিপদ সংকেত, যার মানে হলো বন্দর এবং এর আশেপাশের এলাকায় ঝড়ো হাওয়া এবং সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকি রয়েছে।

আবহাওয়া অফিসের এই নির্দেশনার ফলে উপকূলীয় এলাকার মানুষের মধ্যে এক ধরনের চাপা উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে মৎস্যজীবীরা এখন নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়ে আরও সচেতন হচ্ছেন। সতর্কবার্তায় উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং গভীর সাগরে থাকা সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এতে করে তাদের জীবন ও জীবিকা উভয়ই ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষকেও আবহাওয়ার খবর নিয়মিত অনুসরণ করতে এবং যেকোনো জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষজনকে শুকনো খাবার, পানি এবং জরুরি ওষুধপত্র মজুত করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তবে এর গতিপথ এবং তীব্রতা এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানানো হয়েছে। এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো উপকূলের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তাই সকল প্রকার ঝুঁকিপূর্ণ কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা এবং সরকারি নির্দেশনা মেনে চলা জরুরি। ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা যদিও পুরোপুরি নিশ্চিত নয়, তবে সতর্কতা অবলম্বনই এখন সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। উপকূলীয় এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং স্বেচ্ছাসেবক দলগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে। বিশেষ করে সমুদ্র উপকূলে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার কর্মীদের জরুরি প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে সময় মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং সকলের সহযোগিতা পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।