চলতি সপ্তাহেই আসছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাড়ে ১৩ হাজার শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

চলতি সপ্তাহেই সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বর্তমানে সারা দেশে ১৩ হাজারেরও বেশি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে এবং এই পদগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের আইনগত জটিলতা নেই। নিয়োগবিধি সংশোধনের একটি প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদনের পর্যায়ে আছে।

শনিবার (২৩ আগস্ট) কিশোরগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি জানান। মহাপরিচালক বলেন, তাদের একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে এবং সেই অনুযায়ী চলতি আগস্ট মাসের মধ্যেই ১৩ হাজার ৫০০ এর বেশি শিক্ষক পদ পূরণের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। তার আশা, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নিয়োগের সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। এটি করা গেলে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংকট অনেকাংশে কমে আসবে।

এই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন পোদ্দার। তিনি শিক্ষক বদলি ও তদবির সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শুধু হাওরাঞ্চল নয়, দেশের প্রত্যন্ত ও চরাঞ্চল এমনকি গ্রাম এলাকার শিক্ষকরাও সেখানে থাকতে চান না। তারা শহরের দিকে বদলি হওয়ার জন্য নানা মাধ্যমে তদবির করেন। এর ফলে বদলি ও তদবিরের চাপ বেড়ে যায়, যা শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি বড় সমস্যা। তিনি এটিকে একটি সামাজিক এবং রাজনৈতিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন।

এছাড়াও সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মোহাম্মদ কামরুল হাসান। তাদের বক্তব্যেও প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা উঠে আসে।

এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে বেকার তরুণ-তরুণীদের জন্য এটি একটি দারুণ সুযোগ হবে। সাড়ে ১৩ হাজারেরও বেশি শূন্য পদে নিয়োগের ফলে একদিকে যেমন শিক্ষক সংকট কমবে, তেমনি হাজার হাজার প্রার্থীর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এই দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এর মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মানসম্মত শিক্ষা প্রদানে শিক্ষকরা আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারবেন। একইসাথে, শিক্ষকরাও তাদের নিজ নিজ পদে থেকে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে আশা করা যায়।