প্রতিনিধি ৯ অগাস্ট ২০২৫ , ৮:৫৬ এএম প্রিন্ট সংস্করণ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের কর্মবিরতি এবং শাটডাউন কর্মসূচির ফলে দেশের অর্থনৈতিক খাতে কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে, তা জানতে চেয়ে সরকার দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই-এর কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এই চিঠি দেওয়া হয়। এর পরপরই এফবিসিসিআই তাদের সকল ব্যবসায়ী চেম্বার ও সমিতিকে বিস্তারিত তথ্য জানানোর জন্য অনুরোধ করেছে। এর মধ্যে ক্ষতির ধরন এবং আর্থিক পরিমাণ উল্লেখ করার কথা বলা হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মে ও জুন মাসে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা—এই দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশ জারির প্রতিবাদে এনবিআর কর্মকর্তারা কর্মবিরতি পালন করেন। এর ফলে শিল্প, বিনিয়োগ, আমদানি-রপ্তানি, বন্দর, উৎপাদন, এবং সরবরাহ চেইন মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়। বিশেষ করে আমদানিকারকরা সময়মতো কাঁচামাল ছাড়াতে পারেননি এবং রপ্তানিকারকরাও যথাসময়ে পণ্য পাঠাতে পারেননি। এতে সরকারের রাজস্বও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের জন্য সরকার গত মাসে একটি ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করে। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) যুগ্ম সচিব সৈয়দ রবিউল ইসলামকে এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির কার্যপরিধি হলো, ২৮ ও ২৯ জুন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অফিস বন্ধ থাকায় রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ, দুই মাস ধরে শুল্ক, ভ্যাট ও কর বিভাগের কর্মীদের কর্মবিরতির কারণে সকল কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, কাস্টম হাউস এবং অন্যান্য দপ্তরে রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা। এছাড়াও, এই আন্দোলনের ফলে দেশের সকল স্থল ও নৌবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে, তাও এই কমিটি খতিয়ে দেখবে।
এনবিআর বিলুপ্ত করার অধ্যাদেশটি গত ১২ মে জারি করা হয়েছিল। এর পর থেকে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের দাবি নিয়ে প্রায় দুই মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে যান। ২৮ ও ২৯ জুন তাঁরা দেশব্যাপী কাজ বন্ধ করে দেন, যা পরে ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় প্রত্যাহার করা হয়। এরপর সরকার সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়। সরকার এখন এই ক্ষতির পরিমাণ জানতে চাইছে যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানো যায় এবং সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়।