বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাংলাদেশে এলো স্টারলিংক: মাসিক খরচ ৪২০০ থেকে ৬০০০ টাকা, ডেটা বা গতিসীমা নেই

  প্রতিনিধি ১৪ অগাস্ট ২০২৫ , ১১:৩৪ এএম প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশে এলো স্টারলিংক: মাসিক খরচ ৪২০০ থেকে ৬০০০ টাকা, ডেটা বা গতিসীমা নেই

বাংলাদেশে অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে ইলন মাস্কের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সার্ভিস স্টারলিংক। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে স্টারলিংক দুটি ভিন্ন প্যাকেজ নিয়ে এসেছে যা গ্রাহকদের চাহিদা এবং সামর্থ্য অনুযায়ী সাজানো হয়েছে। এই দুটি প্যাকেজ হলো— রেসিডেন্সিয়াল এবং রেসিডেন্সিয়াল লাইট

 

প্যাকেজ এবং খরচ

 

স্টারলিংকের এই দুটি প্যাকেজের প্রধান পার্থক্য হলো এদের মাসিক খরচে এবং টার্গেট গ্রাহকের ধরণে।

  • রেসিডেন্সিয়াল প্যাকেজ: এই প্যাকেজটির মাসিক খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০০০ টাকা। এটি মূলত এমন গ্রাহকদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে যারা উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, যেমন— বড় পরিবার বা ছোট অফিস। এই প্যাকেজের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা উচ্চ গতিতে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা পাবেন।
  • রেসিডেন্সিয়াল লাইট প্যাকেজ: যারা অপেক্ষাকৃত কম খরচে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চান, তাদের জন্য রয়েছে এই প্যাকেজ। এর মাসিক খরচ ৪২০০ টাকা। এটি মূলত ব্যক্তিগত বা হালকা ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত।

তবে যেকোনো প্যাকেজ নিতে হলে গ্রাহককে শুরুতে এককালীন একটি খরচ করতে হবে। স্টারলিংকের সেটআপ কিট (যন্ত্রপাতি ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম) কেনার জন্য গ্রাহকদের ৪৭,০০০ টাকা দিতে হবে। এই কিটের মধ্যে থাকবে স্যাটেলাইট ডিশ, রাউটার, পাওয়ার সাপ্লাই এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম যা সংযোগ স্থাপনের জন্য অপরিহার্য।

 

অপ্রতিদ্বন্দ্বী সুবিধা: ডেটা বা গতিসীমা নেই

 

স্টারলিংকের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো এর কোনো ডেটা বা গতিসীমা নেই। অন্যান্য প্রচলিত ইন্টারনেট সেবার ক্ষেত্রে যেখানে গ্রাহকদের নির্দিষ্ট ডেটা বা গতির সীমাবদ্ধতা থাকে, সেখানে স্টারলিংক দিচ্ছে আনলিমিটেড ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ। গ্রাহকরা নিরবচ্ছিন্নভাবে সর্বোচ্চ ৩০০ এমবিপিএস পর্যন্ত গতিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন, যা অনলাইন গেমিং, ৪কে স্ট্রিমিং, এবং দ্রুত ফাইল ডাউনলোডের জন্য খুবই উপযোগী।

 

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

 

বাংলাদেশের জন্য স্টারলিংকের আগমন একটি বড় পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। বিশেষ করে যেসব প্রত্যন্ত অঞ্চলে ফাইবার অপটিক বা অন্য কোনো ধরনের ইন্টারনেট অবকাঠামো নেই, সেখানে স্টারলিংক স্যাটেলাইট প্রযুক্তির মাধ্যমে দ্রুত গতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে সক্ষম হবে। এটি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের মতো বিভিন্ন খাতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে। প্রাথমিক খরচ কিছুটা বেশি হলেও, এর গতি এবং ডেটাসীমা না থাকার সুবিধা অনেক গ্রাহককে আকর্ষণ করবে বলে আশা করা যায়। স্টারলিংকের এই উদ্যোগ দেশের ডিজিটাল অবকাঠামোকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।