অর্থনীতি

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্ক: নতুন দিগন্তে সম্ভাবনা

  প্রতিনিধি ১৯ অগাস্ট ২০২৫ , ৭:৩৩ পিএম প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্ক: নতুন দিগন্তে সম্ভাবনা

 

বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সম্প্রতি ঢাকার মতিঝিলে অবস্থিত ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) কার্যালয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকে অংশ নেন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান এবং ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর পল জি. ফ্রস্ট। তাদের আলোচনার মূল বিষয় ছিল দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং নতুন বাজারের সম্ভাবনা উন্মোচন।

বৈঠকের শুরুতেই এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার দীর্ঘদিনের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য, বিশেষ করে তৈরি পোশাকের একটি প্রধান বাজার। এই সম্পর্ককে আরও গতিশীল করতে এবং সাপ্লাই চেইনের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য একটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের এটাই উপযুক্ত সময়। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের পণ্যের ওপর শুল্ক হ্রাস করায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারকে ধন্যবাদ জানান। এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের জন্য বাণিজ্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করে।

অন্যদিকে, মার্কিন কমার্শিয়াল কাউন্সিলর পল জি. ফ্রস্ট দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক এবং নেটওয়ার্কিং বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে, এই ধরনের যোগাযোগ কেবল বাণিজ্য বৃদ্ধিই করবে না, বরং নতুন ব্যবসায়িক সুযোগও তৈরি করবে। তিনি বাংলাদেশের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ইনভেস্টমেন্ট সামিট-এ অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানান। এই ধরনের সামিট উভয় দেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে, যেখানে তারা নতুন প্রকল্প ও অংশীদারিত্বের সুযোগ খুঁজে নিতে পারবে।

ফ্রস্ট আরও বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক উন্নয়নের ওপরও বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। এর মাধ্যমে কেবল পণ্য বিনিময়ই নয়, বরং প্রযুক্তি, জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ক্ষেত্রও প্রসারিত হবে। এই বৈঠক থেকে স্পষ্ট হয় যে, উভয় দেশই বাণিজ্য সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আগ্রহী। একটি সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি এবং ইনভেস্টমেন্ট সামিটের মতো উদ্যোগগুলো ভবিষ্যতে দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বৈঠকে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব মো. আলমগির, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স উইংসের প্রধান মো. জাফর ইকবাল এবং এফবিসিসিআই সেইফটি কাউন্সিলের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শহীদউল্লাহ। এই উচ্চ-পর্যায়ের আলোচনা প্রমাণ করে যে, দু’দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক একটি নতুন এবং সম্ভাবনাময় দিগন্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।