প্রতিনিধি ১৬ অগাস্ট ২০২৫ , ২:৩৭ পিএম প্রিন্ট সংস্করণ
ঢাকা, ১৬ আগস্ট – শনিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরে কৃষি মার্কেট পরিদর্শনের পর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, “যতবড় চাঁদাবাজ-ই হোক না কেন, তাকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।” মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষিত তারিখেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের তারিখ নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে বিভ্রান্তিমূলক মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, “রাজনীতির ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা যেটা বলেছেন, সেটার ওপরে আমাদের কারও কোনো কথা নেই। স্যার যে তারিখ বলেছেন, সেই তারিখে নির্বাচন হবে। যেই মাসে বলেছেন, ওই মাসেই নির্বাচন হবে। কে কী বললো-ওটা শোনার আমাদের দরকার নেই।” তার এই মন্তব্যে নির্বাচন নিয়ে চলমান রাজনৈতিক বিতর্কে একটি সুস্পষ্ট বার্তা পাওয়া গেল।
বাজার পরিদর্শনের সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন যে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে শাক-সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে, তবে বাজার স্বাভাবিক আছে। তিনি আরও বলেন, “প্রচুর আলু মজুত রয়েছে। পাইকারি থেকে খুচরা বাজারে আসতে আসতেই অনেক দাম বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু কৃষকরা দাম পাচ্ছে না। মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভ করছে।”
এই মন্তব্যটি বাজারের একটি পুরোনো সমস্যার দিকে আঙুল তোলে। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে, মধ্যস্বত্বভোগীরা পণ্যের দাম কৃত্রিমভাবে বৃদ্ধি করে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করছে, যার ফলে সাধারণ ভোক্তাদের ওপর আর্থিক চাপ পড়ছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এই পর্যবেক্ষণ প্রমাণ করে যে এই সমস্যাটি এখনও বিদ্যমান এবং এর সমাধানে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এই পরিস্থিতি নিরসনে সরকারকে কঠোর নজরদারি এবং বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী, নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে, এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দৃঢ়তা প্রকাশ করেন। রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমত বা জল্পনা-কল্পনা যে ভিত্তিহীন, সে বিষয়ে তিনি স্পষ্ট করে দেন। তার এই বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়। এটি একটি শক্তিশালী বার্তা যে সরকার প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে বদ্ধপরিকর।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলমের আজকের মন্তব্যগুলি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে দেয়। চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি, বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা এবং আসন্ন নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে সরকারের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা—এ সবই তার বক্তব্যে উঠে এসেছে। তার বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, সরকার দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য বদ্ধপরিকর। এটি জনসাধারণের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে আনবে এবং ভবিষ্যতে একটি স্বচ্ছ ও শক্তিশালী প্রশাসন আশা করা যায়।