জাতীয়

মাছের বৈচিত্র্য রক্ষা ও আমিষের চাহিদা মেটাতে সরকার বদ্ধপরিকর: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

  প্রতিনিধি ২০ অগাস্ট ২০২৫ , ২:৫০ পিএম প্রিন্ট সংস্করণ

মাছের বৈচিত্র্য রক্ষা ও আমিষের চাহিদা মেটাতে সরকার বদ্ধপরিকর: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ উপলক্ষে দেশের জলাশয়গুলো রক্ষা এবং মানুষের আমিষের চাহিদা মেটাতে সরকার কাজ করে যাবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এক বর্ণাঢ্য র‍্যালির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, দেশের মৎস্যজীবীরা মাছের বৈচিত্র্য রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন। এবছর জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের স্লোগান, ‘অভয় আশ্রম গড়ে তুলি, দেশি মাছে দেশ ভরি’ এর বাস্তবায়নে মৎস্যজীবীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। তিনি মৎস্যজীবীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, দেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় তাদের কঠোর পরিশ্রমের কারণে আমরা প্রয়োজনীয় খাদ্য পাচ্ছি। সরকার তাদের পাশে নীতিগত ও প্রশাসনিকভাবে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

র‍্যালি শেষে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত মৎস্য মেলা উদ্বোধন ও পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি মুক্তা ও ঝিনুককে দেশের জাতীয় সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই মেলা দেশের মানুষকে মৎস্য ও সামুদ্রিক সম্পদ সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেবে।

মেলার স্টলগুলোতে মৎস্য খাতের আধুনিক প্রযুক্তি ও উপকরণ প্রদর্শিত হচ্ছে। মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) এবং বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) সহ মোট ২২টি প্রতিষ্ঠান তাদের ২৫টি স্টল নিয়ে মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। এই প্রদর্শনীগুলো দেশের মৎস্য খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. তোফাজ্জেল হোসেন, অতিরিক্ত সচিব মো. ইমাম উদ্দীন কবীর, অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং মৎস্যজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মৎস্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগের পরিচালক আলফাজ উদ্দীন শেখের মৃত্যুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

দেশের জলাশয় রক্ষায় সরকারের অঙ্গীকার

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের এই ঘোষণা দেশের মৎস্য খাতে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। দেশের নদ-নদী, খাল-বিল এবং অন্যান্য জলাশয়গুলো দূষণ ও অবৈধ দখল থেকে রক্ষা করা সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এসব জলাশয় রক্ষা করা গেলে দেশীয় প্রজাতির মাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে, যা দেশের মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণে সাহায্য করবে।

এছাড়াও, সরকার মৎস্যজীবীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করছে। তাদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদান, আধুনিক প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ, এবং মৎস্য চাষের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মৎস্যজীবীরা দেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাদের সহযোগিতা ছাড়া দেশের মৎস্য খাত সমৃদ্ধ করা সম্ভব নয়।

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ শুধু একটি সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান নয়, এটি দেশের মৎস্য খাতের উন্নয়নে একটি বড় পদক্ষেপ। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের মানুষ মৎস্য সম্পদ সম্পর্কে আরও সচেতন হবে এবং মৎস্যজীবীরা তাদের অধিকার সম্পর্কে জানতে পারবে।