প্রতিনিধি ১২ অগাস্ট ২০২৫ , ৯:৪৫ এএম প্রিন্ট সংস্করণ
বাংলাদেশের ফুটবলে এখন মেয়েদের জয়জয়কার। বড়দের পাশাপাশি ছোটরাও দেশের জন্য বয়ে আনছে সম্মান। প্রথমবারের মতো নারী এশিয়ান কাপে সুযোগ পাওয়ার পর এবার অনূর্ধ্ব-২০ দলও এশিয়া কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। মাঠের খেলায় দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে তারা প্রশংসায় ভাসছে। তবে এই সাফল্যের মাঝেও দেশের ফুটবল অঙ্গনে উঠে এসেছে এক অস্বস্তিকর প্রশ্ন—খেলোয়াড়রা কি নিজেদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন?
দীর্ঘদিন ধরেই বাফুফের বিরুদ্ধে মেয়েদের বেতন নিয়ে অভিযোগ ছিল। এবার অভিযোগ উঠেছে তাদের খাবার নিয়ে। বলা হচ্ছে, খেলোয়াড়দের পুষ্টির চাহিদা ঠিকমতো পূরণ হচ্ছে না এবং ডরমিটরিতে তাদের পাঙাশ মাছ খাওয়ানো হয়, যা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপযুক্ত নয়।
তবে বাফুফের নারী উইং কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। বাফুফে ভবনে সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, “পুষ্টিহীনতার কথায় আমি একমত না। বাফুফের ডরমেটরিতে যে খাবার দেওয়া হয়, তার জন্য একজন পুষ্টিবিদ দিয়ে ডায়েট চার্ট তৈরি করা হয়েছে।”
তিনি দৃঢ়তার সাথে আরও বলেন, “আমরা একদিনও পাঙাশ মাছ খাওয়াই না। বেশিরভাগ সময় রুই মাছ, মুরগি, গরু, খাসি এবং ডিম দেওয়া হয়। খেলোয়াড়রা যদি ইলিশ বা পাবদা খেতে চায়, সেটিও দেওয়া হয়।”
কিরণ প্রশ্ন তোলেন, “প্রতিদিন তো এমন খাবারই দেওয়া হয়। কেন মিথ্যা নিউজ করা হয়? মেয়েরা যদি ঠিকমতো না খেতে পারে, তাহলে তো তাদের শক্তি থাকবে না। ৯০ মিনিট ধরে একই ছন্দে খেলতে পারবে না। তারা কি না খেয়ে খেলে? পাঙাশ মাছ খেয়ে খেলে? না, আমরা তাদের পুষ্টি নিশ্চিত করি।”
লাওসে অনূর্ধ্ব-২০ দলের খাবার নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক প্রসঙ্গে কিরণ বলেন, “একেক দেশের খাবার একেক রকম হয়। লাওসের খাবার মেয়েরা খেতে পারছিল না। বাঙালি খাবার খেতে না পারার কারণে তারা দুর্বল হয়ে পড়ছিল। এ কারণে আমি বাঙালি রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার খাওয়ানোর কথা বলেছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের পাইপলাইন অনেক শক্তিশালী, যা এই সাফল্যের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়। যে বছর সিনিয়র টিম কোয়ালিফাই করল, একই বছর বয়সভিত্তিক দলও কোয়ালিফাই করলো। এতে বোঝা যায়, বাংলাদেশের নারী ফুটবল সঠিক পথে আছে এবং ধারাবাহিকভাবে উন্নতি করছে।”
দেশের নারী ফুটবল যখন নতুন উচ্চতায় পৌঁছাচ্ছে, তখন খেলোয়াড়দের মৌলিক চাহিদা নিয়ে এমন বিতর্ক নিঃসন্দেহে হতাশাজনক। তবে বাফুফের পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, এই বিতর্ক শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় এবং মেয়েদের খেলার মান ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি আরও স্বচ্ছভাবে নিশ্চিত করা হয় কিনা।