রাজনীতি

সংস্কার না হলে নির্বাচনে অংশ নেবে না এনসিপি: নাহিদ ইসলাম

  প্রতিনিধি ২৫ অগাস্ট ২০২৫ , ৯:১৩ এএম প্রিন্ট সংস্করণ

সংস্কার না হলে নির্বাচনে অংশ নেবে না এনসিপি: নাহিদ ইসলাম

কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া: নির্বাচনের আগে ‘সংস্কার’ই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রধান এজেন্ডা বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, এনসিপি কেবল ‘জুলাই সনদের’ আইনি ভিত্তির অধীনে অনুষ্ঠিতব্য গণপরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক। এর বাইরে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরিকল্পনা তাদের নেই। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির একটি অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন।

রোববার ‘২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান বীরত্বগাথা ও বিপ্লব-পরবর্তী বাংলাদেশ গঠনে প্রবাসীদের ভূমিকা’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাহিদ ইসলাম দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং তার দলের অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমরা নির্বাচনের তারিখ নিয়ে কখনো পক্ষ বা বিপক্ষ কোনো অবস্থানে ছিলাম না। আমরা শুধু চেয়েছি সংস্কার এবং বিচারের নিশ্চয়তা। যদি এই দুটি শর্ত পূরণ করে ডিসেম্বরেও নির্বাচন হয়, তাতেও আমাদের আপত্তি নেই।”

নির্বাচন পেছানো বা আসন সমঝোতার গুজব ভিত্তিহীন

বিএনপির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে যেসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলোকে ‘মিথ্যা প্রোপাগান্ডা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, “নির্বাচন পেছানো বা আসন সমঝোতার মতো কথাগুলো কেবলই গালগল্প। আমাদের কাছে নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা জয় লাভ করার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো সংস্কার।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, আসন্ন গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের মানুষের কাছে আমরা গর্ব করে বলতে চাই যে, এই পরিবর্তনটা এনসিপি বা জুলাইয়ের ফলে এসেছে। তাই, নির্বাচনের আগে সংস্কারই তাদের প্রধান এজেন্ডা। এই সংস্কারের পরেই তারা নির্বাচন নিয়ে ভাববেন।

এনসিপি মনে করে, একটি অর্থবহ ও টেকসই পরিবর্তনের জন্য নির্বাচনের চেয়ে আইনগত সংস্কারের ওপর জোর দেওয়া জরুরি। তাদের লক্ষ্য কেবল ক্ষমতা লাভ নয়, বরং এমন একটি রাজনৈতিক কাঠামো তৈরি করা যেখানে মানুষের অধিকার ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। এনসিপি বিশ্বাস করে, এই ধরনের সংস্কারের পরই একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব।

প্রবাসীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য

নাহিদ ইসলাম তার বক্তব্যে দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকারও প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদান অনস্বীকার্য। বিপ্লব-পরবর্তী বাংলাদেশ গঠনেও তাদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। তিনি প্রবাসীদের প্রতি দেশের এই পরিবর্তনের প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনসিপি’র যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দীন মোহাম্মদ। মালয়েশিয়ায় এনসিপি ডায়াসপোরা অ্যালায়েন্সের সভাপতি মোহাম্মদ এনামুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আলমগীর চৌধুরী আকাশ।

নাহিদ ইসলামের এই বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে, এনসিপি একটি টেকসই পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করছে। নির্বাচনের চেয়ে তারা দেশের রাজনৈতিক ও আইনগত কাঠামোতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে বেশি আগ্রহী। এই সংস্কারের মাধ্যমে তারা এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে চায়, যেখানে একটি অর্থপূর্ণ এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী নির্বাচন সম্ভব হবে। তাদের এই অবস্থান বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে।