প্রতিনিধি ৯ অগাস্ট ২০২৫ , ১:০৯ পিএম প্রিন্ট সংস্করণ
দেশের মোট আয়তনের ২০ শতাংশ বনভূমি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য সুপরিকল্পিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে দেশের জেগে ওঠা নতুন চর, উপকূলীয় এলাকা এবং পতিত জমিতে বনভূমি সৃষ্টির পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বন কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে আধুনিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিও শুরু করা হবে।
শনিবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর বন ভবনে অনুষ্ঠিত বন বিভাগের উন্নয়ন বিষয়ক এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, যুগ্ম সচিব শামীমা বেগম এবং প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বন বিভাগের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে ডিজিটাল মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করা হবে। এর ফলে বনকর্মীরা বিধিমোতাবেক বনের উন্নয়নমূলক কাজে সঠিকভাবে নিয়োজিত থাকতে পারবেন। বিপন্ন বন্য প্রাণী সংরক্ষণের জন্যও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো ‘এলিফ্যান্ট করিডর রেস্টোরেশন’ কার্যক্রম এবং ক্যাপটিভ হাতির জন্য বিশেষ অরফানেজ স্থাপন। এই পদক্ষেপগুলো বন্য প্রাণীর আবাসস্থল রক্ষা এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণের পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নের উপরও জোর দিচ্ছে সরকার। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, মধুপুর এলাকায় কমিউনিটি ট্যুরিজমের সুযোগ তৈরি করে স্থানীয় জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং প্রকৃতি সংরক্ষণ একসঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে স্থানীয়রা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবে এবং একই সাথে বনের প্রতি তাদের মমত্ববোধ বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়াও, নতুন প্রজন্মের মধ্যে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের প্রতি ভালোবাসা জাগানোর জন্য একটি অত্যাধুনিক নেচার লার্নিং সেন্টার স্থাপন করা হবে। এটি রাজধানীর পূর্বাচলে স্থাপন করা হবে, যেখানে শিশুরা প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে শিখতে পারবে এবং পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হবে।
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জোর দিয়ে বলেন, “আমাদের বন শুধু গাছের সমষ্টি নয়, এটি আমাদের জীবনের রক্ষাকবচ।” তিনি বনভূমি বৃদ্ধি ও সংরক্ষণে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এই নতুন উদ্যোগগুলো দেশের বনভূমি বৃদ্ধি, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।