প্রতিনিধি ২৪ অগাস্ট ২০২৫ , ৯:৩৪ এএম প্রিন্ট সংস্করণ
এক তারকা জরিপের পুরস্কার থেকে জন্ম নেওয়া এক ঘরোয়া আড্ডা শেষ পর্যন্ত পরিণত হলো দেশের সবচেয়ে বড় তারকা শাকিব খানের বাড়ির এক অন্তরঙ্গ মুহূর্তে। দেশের সেরা নাট্য অভিনেতা হিসেবে মেরিল–প্রথম আলো তারকা জরিপে প্রথমবার পুরস্কার জিতেছেন অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব। এই আনন্দ উদযাপনের জন্যই তার বন্ধুরা, অভিনেতা সিয়াম আহমেদ ও জোভান, তার কাছে একটি ট্রিট চেয়েছিলেন। আর সেই ট্রিট থেকেই পরিকল্পনা হলো একটি আড্ডার।
পবিত্র ঈদুল আজহার পরপরই ঢাকার এক জায়গায় সেই আড্ডাটি শুরু হয়। এতে যোগ দেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী, শরিফুল রাজ, সিয়াম আহমেদ, ফারহান আহমেদ জোভান এবং পরিচালক মোস্তফা কামাল রাজ। এই তারকাদের আড্ডা যখন জমে উঠেছে, তখন তৌসিফের উদ্দেশে চঞ্চল চৌধুরী মজার ছলে বলেন, “তৌসিফ, তোর পুরস্কার কাকে উৎসর্গ করেছিস? শাকিব খানকে?” তৌসিফও জানান যে তিনি সত্যিই শাকিব খানকে তার অনুপ্রেরণা মনে করেন। তখনই চঞ্চল চৌধুরী প্রস্তাব দেন, “তাহলে চলো, শাকিব খানের বাসায় গিয়ে বসা যাক।”
এই প্রস্তাবে শাকিব খান সানন্দে রাজি হন। এর পরেই তরুণ অভিনেতাদের দল চঞ্চল চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে শাকিবের বাসায় চলে যান। শাকিব খান তাদের দারুণভাবে স্বাগত জানান। স্বল্প সময়ের জন্য আড্ডা দিতে গেলেও তাদের আলাপ জমে ওঠে। সেই আড্ডায় শাকিব খান তার ক্যারিয়ারের অভিজ্ঞতার কথাগুলো তুলে ধরেন। শাকিবের কথা শুনতে শুনতে তরুণ অভিনেতারা মুগ্ধ হয়ে যান। শাকিব খানের জীবনের সংগ্রাম, সাফল্য এবং ব্যর্থতার গল্পগুলো তাদের মনোযোগ কেড়ে নেয়।
তৌসিফ জানান, শাকিব খানকে দূর থেকে তিনি যেভাবে দেখেছেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি তার থেকেও অসাধারণ একজন মানুষ। তিনি বলেন, “শাকিব ভাই আমাদের মতো তরুণদের যে অভিজ্ঞতা শিখিয়েছেন, তা আমাদের এই দীর্ঘ ক্যারিয়ারেও আমরা পাইনি। তিনি কেন ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ নায়ক, সেদিনই আমরা বুঝতে পেরেছিলাম।” শাকিব খানের জীবনের সংগ্রাম, হতাশা ও সাফল্যগুলো তাকে অনুপ্রাণিত করেছে। জীবনের কঠিন সময়ে কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়, তা শাকিবের গল্প থেকে তারা শিখেছেন।
আড্ডায় চঞ্চল চৌধুরীও শাকিবের সঙ্গে তার অভিনীত সিনেমা ‘তুফান’ নিয়ে কথা বলেন। তারা দুজন তাদের পুরোনো অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন, যা উপস্থিত তরুণদের জন্য এক শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা ছিল। রাত ১২টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত তাদের এই আড্ডা চলতে থাকে। জোভান এবং সিয়ামের মতো তরুণ তারকারাও শাকিব খানের ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হন। জোভান জানান, শাকিব খান নম্র-ভদ্র এবং অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তার সঙ্গে প্রথম পরিচয়েই তিনি মুগ্ধ হয়েছেন।
দীর্ঘ ২৫ বছরের ক্যারিয়ারে শাকিব খানকে অনেক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। একসময় অনেকেই তাকে বলতেন, “তোমার দিন শেষ শাকিব, ইউ আর ডেড হর্স।” সেই সময় হতাশ হয়েও তিনি হাল ছাড়েননি। তিনি তার অভিজ্ঞতা থেকে শিখেছেন যে জীবনে বাধা আসবে, কিন্তু থেমে থাকা যাবে না। শাকিব খান শূন্য হাতে এসেছিলেন, আর আজ তিনি এই ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ তারকা। তার এই অদম্য যাত্রা তরুণ অভিনেতাদের জন্য এক দারুণ অনুপ্রেরণা।
পুরস্কার থেকে শুরু হওয়া এই আড্ডাটি শাকিব খানের বাড়িতে গিয়ে এক ভিন্ন মাত্রা পায়, যা তারকাদের মধ্যে এক দারুণ বন্ধুত্বের বন্ধন তৈরি করে। এই আড্ডাটি ছিল তরুণ ও অভিজ্ঞ প্রজন্মের মেলবন্ধন, যা বাংলাদেশের মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিতে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করল।