হাজার বছরের ইতিহাসে বাঙালীর শ্রেষ্ঠতম অর্জন বাংলাদেশেরর স্বাধীনতা আর এই স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের সঙ্গে যার নাম চিরস্নরনীয় হয়ে আছে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাঙালী জাতির অবিসংবাদিতত নেতা পাকিস্তান সৃষ্টির অল্প কিছুকাল পরেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে বৈষম্য আর পরাধীনতা গ্লানি। ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীরর সঙ্গে এ দেশের জনগনের দ্বন্দ্ব আরো সুস্পষ্ট হয়। নিপীড়িত জাতির ভাগ্যাকাশে যখন দুর্যোগের কালোমেঘ তখনই শেখ মুজিবুর রহমানের গৌরবময় আবির্ভাব অসাধারন দেশপ্রেম ও দুরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে তিনি সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন। কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতি তাই ভালোবেসে ১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে বঙ্গবন্ধু উপাদিতে ভূষিত করে। স্বাধীনতার পর তাকে জাতির পিতা মর্যাদার অভিষিক্ত করা হয়।
স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জম্মহগ্রহন করেন পিতা শেখ লুৎফর রহমান, মাতা সায়েরা খাতুন। দুই ভাই, চার বোনের মধ্যে শেখ মুজিব ছিলেন পিতা – মাতার তৃতীয় সন্তান পারিবারিক আনন্দঘন পরিবেশে টুঙ্গিপাড়ায় তার শৈশব- কৈশোরের দিনগুলো কাটে গিমাডাঙ্গা প্রাইমারি স্কুল থেকে ১৯৪১ সালর তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন। এই সময় তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন শেরে বাংলা এ. কে ফজলুল হক ও হোসেন শহীদ সোহরাত্তয়ার্দি গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে এক সংবর্ধনা সভা শেষে ফিরে যাচ্ছিলেন পথরোধ করে দাড়ালেন শেখ মুজিব। স্কুলের ছাত্রাবাসে জরাজীর্ণ ছাত্রবাস মেরামতের জন্য অর্থ চাই শেরে বাংলা প্রথমে কিশোর মুজিবের সাহস ও স্পষ্ট বক্তব্য আর জনহিতৈষী মনোভাবের পরিচয় পেয়ে অবাক হন। তারপর সহ্যস্যে জিজ্ঞেস করেন ছাত্রবাসে মেরামত করতে কত টাকা দরকার স্পষ্ট কন্ঠে কিশোর শেখ মুজিব বললেন বারো শত টাকা শেরে বাংলা এ. কে ফজলুল হক সাথে সাথে টাকার ব্যবস্থা করলেন বাল্যকাল থেকেই শেখ মুজিবুর রহমান একটু অন্যরকম ছিলেন। একবার নিজের বাড়ির গোলার ধান গ্রামের গরিব চাষিদের মাঝে বিলিয়ে দেন। পিতা শেখ লুৎফর রহমান এর কারন জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেছিলেন এবার চাষিদের জমির ধান সব বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে আকালে পড়েছে কৃষক আমাদের মতো ওদের পেটেও ক্ষুধা আছে। ওরাও আমাদের মতো বাচতে চায় বাবা ছেলের এই সৎ সাহস ও মহানুভবতা দেখে বেশ খুশি হলেন। এভাবে শেখ মুজিবুর রহমান গরিবের বন্ধু আর নিপীড়িত মানুষের হৃদয় জয় করেন।
কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৪৪ সালে আইএ এবং ১৯৪৭ সালে বিএ পাস করে তিনি ১৯৪৬ সালে ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রসংসদের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। ছাত্র শেখ মুজিবুর রহমান ক্রমেই নেতা মুজিবে বিকশিত হতে থাকেন। ১৯৪৭ এ দেশ বিভাগের পর তিনি আইন পড়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জন। ১৯৪৮ সালে গঠিত পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের তিনি ছিলেন অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৪৮ সালে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হলে এর সঙ্গে তিনি যুক্ত হন এ বছর ১১ই মার্চ রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে হরতাল পালনের সময় তিনি গ্রেফতার ও কারারুদ্ধ হন। বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে সুপারিশ করে পূর্ববঙ্গ পরিষদে একটি প্রস্তাব গ্রহন করা হবে এ মর্মে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে পূর্ববঙ্গেরর নাজিমুদ্দিন সরকার চুক্তিবদ্ধ হলে তিনি মুক্তি লাভ করেন। ১৯৪৯ সালে আত্তয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হলে তিনি যুগ্ম সম্পাদকের পদ লাভ করেন এবং ১৯৫৩ সালে সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টেরর প্রার্থী হিসেবে প্রাদেশিক আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিত্ব লাভ করেন এ দেশের মানুষের অধিকার আদায় এবং শোষন বঞ্জনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান বহুবার গ্রেপ্তার ও কারারুদ্ধ হন।
১৯৬৬ সালে তিনি পেশ করেন বাঙালি জাতির ঐতিহাসিক মুক্তির সনদ ছয় দফা এ সময় নিরাপত্তা আইনে তিনি বার বার গ্রেপ্তার হতে থাকেন। আচ গ্রেপ্তার হয়ে আগামীকাল জামিনে মুক্ত হলে সন্ধ্যায় তিনি আবার গ্রেপ্তার হস এরকম চলে পর্যায়ক্রমিক গ্রেপ্তার তিনি কারারুদ্ধ জীবনযাপন করতে থাকেন তাকে প্রধান আসামী করে দায়ের করা হয় ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা। ১৯৭০ সালে জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে তার নেতৃত্ব আত্তয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে এই নির্বাচনে পাকিস্তানের সর্বমোট সংসদীয় অাসন সংখ্যা ছিল ৩০০ টি জনসংখ্যার ভিত্তিতে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য আসন বরাদ্দ হয় ১৬৯ টি। তার মধ্যে বঙ্গবন্ধু এবং তার দল ১৬৭ টি আসনে জয় লাভ করে পাকিস্তান কেন্দ্রীয় পরিষদে নিরঙ্কূষ সংখ্যাগরিষ্ঠা অর্জন করেন কিন্তু সরকার গঠনের সুযোগ না দিয়ে প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১লা মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনিদিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেন। এই প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৩রা মার্চ অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে ( বর্তমানে সোহরাত্তয়ার্দি উদ্যান স্মরণকালের বৃহত্তম জনসভায় বঙ্গবন্ধু ঘোষনা করেন-
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
২৫শে মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালীর ওপর ঝাপিয়ে পড়ে শুরু করে ইতিহাসের জগন্যতম হত্যাকান্ড। ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে শেষে অর্ধাৎ ২৬ এ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষনা করেন। এ ঘোষনার পরেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে নিক্ষেপ করা হয় শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১০ই এপ্রিল বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তাকে রাষ্ট্রপতি করে গঠিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধশেষে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্য উদিত হয় ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি বিজয় সূচিত হয়। ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি তিনি পাকিস্তানের কারাগারে থেকে মুক্তি লাভ করে ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করেন।
হিংসার কারণে দা দিয়ে কুপিয়ে ছাদের গাছ কাটলেন এই মহিলা।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে এক মহিলাকে দা নিয়ে ছাদের গাছ কাটতে দেখা যায়। সমগ্র জাতির...