শিক্ষা

ঢাবিতে ছাত্রদলের ডাকসু নির্বাচনের প্যানেল ঘোষণা: শেষ মুহূর্তেও জমজমাট ক্যাম্পাস

  প্রতিনিধি ২০ অগাস্ট ২০২৫ , ১২:২১ পিএম প্রিন্ট সংস্করণ

ঢাবিতে ছাত্রদলের ডাকসু নির্বাচনের প্যানেল ঘোষণা: শেষ মুহূর্তেও জমজমাট ক্যাম্পাস

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের উত্তেজনা শেষ মুহূর্তেও তুঙ্গে। দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরগরম পুরো ক্যাম্পাস। এরই মধ্যে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে প্যানেল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আজ বুধবার (২০ আগস্ট, ২০২৫) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্যানেল ঘোষণা করা হয়।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন গণমাধ্যমকে জানান, তাঁরা সকাল থেকেই ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের জন্য একটি শক্তিশালী প্যানেল চূড়ান্ত করতে কাজ করছিলেন। অবশেষে সব আলোচনা ও পর্যালোচনা শেষে দুপুর ১২টার দিকে তাঁরা প্যানেল ঘোষণা করতে সক্ষম হন। যদিও এর আগে গতকাল মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ দিনেও ছাত্রদল তাদের প্যানেল চূড়ান্ত করতে পারেনি। সে সময় সংগঠনটির নেতাকর্মীরা একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই ধারণা করেছিলেন যে ছাত্রদল হয়তো শেষ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দেবে না, কিন্তু আজকের প্যানেল ঘোষণার মধ্য দিয়ে সেই জল্পনার অবসান ঘটল।

দীর্ঘদিন ধরে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ছাত্রদল আন্দোলন করে আসছিল। তাদের দাবি ছিল, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। এই দাবি পূরণের জন্য তারা নিয়মিত কর্মসূচিও পালন করেছে। অবশেষে যখন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলো, তখন থেকেই ছাত্রদল প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। তাদের লক্ষ্য ছিল, এই নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্রদের অধিকার ফিরিয়ে আনা এবং ক্যাম্পাসে একটি সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করা।

ছাত্রদলের প্যানেল ঘোষণার পর এখন সব প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পালা। আজ বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার এই প্রক্রিয়াও বেশ উত্তেজনাপূর্ণ। বিভিন্ন প্রার্থীরা তাদের সমর্থক ও অনুসারীদের নিয়ে মিছিল সহকারে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাচ্ছেন। এতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এক উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে।

ডাকসু নির্বাচনের এই প্যানেল ঘোষণার ফলে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও জমজমাট হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিভিন্ন প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ও প্রতিশ্রুতি নিয়ে ছাত্রদের কাছে যাচ্ছেন। তারা চেষ্টা করছেন ছাত্রদের মন জয় করতে। এই নির্বাচনে কে জয়ী হবে, তা নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে, এই নির্বাচনকে ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে নতুন করে তাদের অধিকারের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে, সেটাই সবচেয়ে বড় অর্জন।

এই নির্বাচন শুধুমাত্র একটি ছাত্র সংসদ নির্বাচন নয়, এটি একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতিফলন। দীর্ঘকাল ধরে বন্ধ থাকা এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব উঠে আসবে, যা দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অঙ্গনেও প্রভাব ফেলবে। এখন দেখার বিষয়, কে বা কারা এই নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্রদের আস্থা অর্জন করে নতুন দিনের ডাকসুতে নেতৃত্ব দেয়।