আসন্ন নির্বাচনে তরুণ ও নারী ভোটারদের জন্য থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তরুণ ও নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, এই নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের জন্য আলাদা বুথ থাকবে। এছাড়া নারী ও পুরুষদের জন্য পৃথক বুথ তো থাকছেই।

সোমবার সকালে ঢাকা-৩ সংসদীয় আসনের অন্তর্গত দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের তেঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা জানান, একটি উৎসবমুখর ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে এবং তাদের স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে তাদের জন্য পৃথক বুথ থাকবে। একইভাবে নারী ভোটারদের জন্যও আলাদা বুথ থাকবে, যা তাঁদের ভোটদান প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও নিরাপদ করবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। উপদেষ্টা বলেন, ইতোমধ্যে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশিক্ষণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে বডি-অর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ক্যামেরাগুলো জেলা এবং কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা হবে, যাতে ভোটগ্রহণের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যায়। বর্তমানে পুলিশ, বিজিবি এবং কারারক্ষীদের কাছে কিছু বডি-অর্ন ক্যামেরা থাকলেও, এই নির্বাচনের জন্য নতুন করে আরও ৪০ হাজার ক্যামেরা কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, কোনো চাঁদাবাজকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না, সে যে দলেরই হোক না কেন। ইতোমধ্যে অনেক চাঁদাবাজকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। চাঁদাবাজিমুক্ত একটি পরিবেশ নিশ্চিত করাই সরকারের লক্ষ্য।

এর আগে উপদেষ্টা র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-১০ এর সদর দপ্তর এবং কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন করেন। কারাগার পরিদর্শনকালে তিনি বন্দীদের খাবার, স্বাস্থ্যসেবা ও জীবনযাত্রার মান পর্যবেক্ষণ করেন এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। পরে তিনি কেরাণীগঞ্জ মডেল থানাও পরিদর্শন করেন। এসব পরিদর্শনের উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রস্তুতি সরেজমিনে যাচাই করা।

নির্বাচনে তরুণ ও নারী ভোটারদের জন্য বিশেষ সুবিধা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে ভোটারদের মনে আস্থা তৈরি করবে বলে আশা করা যায়। এই পদক্ষেপগুলো একটি অবাধ, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।