শান্তি আলোচনায় বসতে হবে পুতিনকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধানের কড়া বার্তা

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রধান উরসুলা ভন ডার লেন সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ইউক্রেন নিয়ে শান্তি আলোচনায় বসার জন্য কড়া আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনালাপের পর তিনি এই মন্তব্য করেন। ইউক্রেন ইস্যুতে শান্তি আলোচনায় বসতে ক্রেমলিনের গড়িমসির পরই ভন ডার লেন এমন আহ্বান জানান।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট ভন ডার লেন এক বার্তায় বলেন, “কিয়েভে ভয়াবহ হামলার পর প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ও পরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বললাম। আমাদের ইইউর কার্যালয়ও এ হামলার শিকার হয়েছে। পুতিনকে আলোচনায় আসতেই হবে।”

গত রাতে ইউক্রেনে অন্যতম বড় বোমা হামলা চালায় মস্কো। এই হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনৈতিক মিশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই হামলার নিন্দা জানিয়ে ভন ডার লেন বলেন, “ইউক্রেনে ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ীভাবে শান্তি নিশ্চিত করতে হবে। এতে শক্তিশালী ও বিশ্বাসযোগ্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তার মাধ্যমে দেশটি নিরাপদ হয়ে উঠতে পারে।”

 

শান্তি প্রক্রিয়া এবং পশ্চিমা দেশগুলোর ভূমিকা

 

ইউক্রেনে সংঘাত শুরুর পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই সংকট সমাধানের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে একটি শান্তি প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হলে কীভাবে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে, তা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো আলোচনা করছে।

ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় শান্তি পরিকল্পনার সমর্থনে ভূমিকা রাখতে পারে। তবে, তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, ইউক্রেনে আমেরিকান সৈন্য মোতায়েন করা হবে না। এই বিষয়ে ভন ডার লেন লিখেছেন, “ইউরোপ সম্পূর্ণভাবে তার দায়িত্ব পালন করবে।”

তিনি ইউক্রেনের অস্ত্র তহবিলে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে ইইউর নতুন একটি বড় কর্মসূচির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এর মাধ্যমে ইইউ ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি শান্তি প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চায়।

 

কিয়েভে ভয়াবহ হামলার পর বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ

 

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই কিয়েভে বেশ কিছু ভয়াবহ হামলা হয়েছে, যা বেসামরিক মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি করেছে। সর্বশেষ হামলায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনৈতিক মিশনের ক্ষতি হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। এই হামলার কারণে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হামলা শান্তি আলোচনার সম্ভাবনাকে আরও কঠিন করে তুলতে পারে। তবে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভন ডার লেন-এর মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, ইইউ ইউক্রেনের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে এবং রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনার জন্য চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে।

ইউক্রেন সংকট সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ বাড়লেও, রাশিয়া এখনও তাদের অবস্থান থেকে সরতে রাজি নয়। এই পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক কূটনীতি কতটা সফল হবে এবং আদৌ শান্তি আসবে কিনা, তা এখনো বলা মুশকিল। তবে, এটা স্পষ্ট যে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পশ্চিমা দেশগুলো দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।