পবিত্র ঈদুল আজহার আনন্দকে পরিবারের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে নাড়ির টানে নগর ছাড়তে শুরু করেছেন অসংখ্য মানুষ। আগামীকাল শুক্রবার ও শনিবার দুইদিন সাপ্তাহিক ছুটি ঈদের ছুটির সাথে যুক্ত হওয়ায় আজ থেকেই শুরু হয়েছে ঈদ যাত্রা। নগরীর বিভিন্ন বাস স্টেশনে দেখা যায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের ভিড় লেগে আছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক যাত্রী হচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। মূলত যারা অগ্রিম টিকেট কেটে রেখেছিলেন তারাই আজ ঢাকা ছাড়ছেন। তবে অনেকেই টিকিট কেটে যাওয়ার জন্য কাউন্টারে ভিড় জমাচ্ছেন। বরাবরের মতো এবারও টিকিটের দাম নিয়মিত ভাড়ার চাইতে বেশি এমন অভিযোগ অনেকের। কিন্তু তারপরও ঝামেলামুক্ত হয়ে নির্বিঘেœ গন্তব্যস্থলে যাওয়াটাই তাদের কাছে মুখ্য। আবহাওয়া প্রতিকূল অবস্থায় থাকায় বিভিন্ন নৌরুটে ফেরি পারাপার ও লঞ্চ পারাপার বন্ধ ও কোথাও কোথাও শিথিল করায় ভোগান্তিতে পড়ছে যাত্রীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরি ছাড়ার অপেক্ষায় থেকে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের।
এদিকে শিডিউল বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে ঈদ যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ভোর হতে বেশ কয়েকটি ট্রেন নির্ধারিত সময়ের কমপক্ষে ২/৩ ঘণ্টা পরে স্টেশন ছেড়ে গেছে। ফলে বাচ্চাকাচ্চা ও ব্যাগ, সুটকেস নিয়ে অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে যাত্রীদের। এ ব্যাপারে এক ট্রেনযাত্রী বলেন ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় নতুন কিছু নয়, তাই আর অবাক হই না। তবে বাড়ি গিয়ে পরিবারের সকলের সাথে মিলিত হতে পারলে এ কষ্ট গায়ে লাগবে না।
ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় বিষয়ে স্টেশন ম্যানেজার মি. আমিনুল বলেন, ঈদের সময় যাত্রী স্বাভাবিকভাবেই বেশি থাকে। ফলে এই অতিরিক্ত যাত্রী উঠানামা করতে একটু বেশি সময় নেয়। তাই হয়তো কিছু ট্রেন শিডিউল রক্ষা করতে পারেনি। তবে অনেক ট্রেন নির্দিষ্ট সময়েই ছেড়ে গেছে। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি যাতে নির্দিষ্ট সময়েই ট্রেন ছেড়ে যেতে পারে। এদিক থেকে নৌরুটের অবস্থা তুলনামূলক ভালো বলা যায়। এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট ধারণক্ষমতা রক্ষা করেই ঘাট থেকে লঞ্চ,ইস্টিমারগুলো ছেড়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় যাত্রীরা নিজে থেকেই অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে উঠছেন না বলে মন্তব্য অনেকের। তবে আগামী দিনগুলোতে আবহাওয়া ঠিক না হলে নৌরুটের যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে। কেননা ঢাকা থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলসহ বিভিন্ন প্রান্তের অধিকাংশ মানুষ নৌপথে যাতায়াত করেন। যেহেতু তারা বাস কিংবা ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করেননি তাই বাধ্য হয়ে শেষ ভরসা হিসেবে নৌপথেই রওনা হতে হবে। তাই এবারের ঈদ যাত্রায় আবহাওয়া একটি চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে আবহাওয়া বিভাগ যাত্রীদের আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্যের জন্য একটি নম্বর চালু করেছেন। ১০৯০ নম্বরে কল করে যে কেউ জেনে নিতে পারবেন আবহাওয়ার ভবিষ্যৎ খবরাখবর। এবারে ঘরমুখো যাত্রীদের আরও একটু দুশ্চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে চলমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি। সারা দেশে প্রায় মহামারি আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু। প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা পঞ্চাশ ছাড়িয়েছে। আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০ হাজারের উপরে। এ সংখ্যা বেড়ে চলেছে আশংকাজনক হারে। যেহেতু ঢাকায় এ রোগীর সংখ্যা বেশি আর ঢাকা থেকেই কয়েক লক্ষ মানুষ যাচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে তাই এ রোগ সারাদেশে আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েই যাচ্ছে। সব মিলিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা আর আশংকা নিয়েই এবারের ঈদ যাত্রায় শরিক হয়েছে লক্ষ কোটি মানুষ। সবকিছু ছাপিয়ে ঈদ সবার জীবনে আনন্দ বয়ে আনুক এই প্রত্যাশা সকলের।
Vaccine data collection started in Jagannath University (JU)
The administration of Jagannath University (JU) has called upon the teachers, students, and officials of the university to provide information...