অর্থনীতি

ঢাকার পুঁজিবাজারে সূচকের পতন: সপ্তাহ শেষ হচ্ছে হতাশা নিয়ে

  প্রতিনিধি ২১ অগাস্ট ২০২৫ , ১:৩৮ পিএম প্রিন্ট সংস্করণ

ঢাকার পুঁজিবাজারে সূচকের পতন: সপ্তাহ শেষ হচ্ছে হতাশা নিয়ে

বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে লেনদেনের শুরুতেই ঢাকার পুঁজিবাজারে দেখা গেছে হতাশার চিত্র। দিনের প্রথম ঘণ্টাতেই অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমার পাশাপাশি সবগুলো সূচকই পড়েছে। এটি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি করেছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চিত্র

দিনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯ পয়েন্ট কমেছে। এর পাশাপাশি, শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ পয়েন্ট এবং বাছাই করা ব্লুচিপ কোম্পানিগুলোর সূচক ডিএস-৩০ ৩ পয়েন্ট হ্রাস পেয়েছে। এই সূচকগুলোর পতন স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে বাজারের সামগ্রিক পরিস্থিতি নেতিবাচক দিকে এগোচ্ছে।

লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর কমেছে এমন কোম্পানির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। প্রথম ঘণ্টায় মোট ১৬৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে, যেখানে দাম বেড়েছে মাত্র ১২৩টি কোম্পানির। এছাড়া, ৯১টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত আছে। এই অসমতা বাজারের দুর্বলতাকেই তুলে ধরে।

লেনদেনের পরিমাণ অবশ্য খুব বেশি গতিশীল ছিল না। প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৭০ কোটি টাকার বেশি শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা বাজারের বর্তমান প্রেক্ষাপটে খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। লেনদেনের পরিমাণ কম থাকলে তা বাজারের আস্থা সংকটের ইঙ্গিত দেয়।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চিত্র

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই ধরনের চিত্র দেখা গেছে। প্রথম ঘণ্টায় সার্বিক সূচক ৩৪ পয়েন্ট কমেছে। সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২২টির শেয়ারের দাম কমেছে, যা বেড়েছে এমন কোম্পানির (২৫টি) তুলনায় প্রায় সমান। পাঁচটি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত আছে।

সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ খুবই কম ছিল। প্রথম ঘণ্টায় মাত্র ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এটি ঢাকার বাজারের তুলনায় খুবই সামান্য, যা সিএসই-এর বর্তমান দুর্বলতাকে প্রতিফলিত করে।

বিনিয়োগকারীদের প্রতিক্রিয়া ও বাজারের ভবিষ্যৎ

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এই ধরনের পতন স্বাভাবিকভাবেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা তৈরি করেছে। অনেক বিনিয়োগকারীই আশা করেছিলেন যে সপ্তাহ শেষ হওয়ার আগে বাজার কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াবে, কিন্তু প্রথম ঘণ্টার চিত্র তাদের সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে।

বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পতন সাময়িক হতে পারে, তবে যদি এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে তা বাজারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। অর্থনৈতিক অস্থিরতা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মতো বিষয়গুলো বাজারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের সতর্কভাবে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

সামনের দিনগুলোতে বাজারের গতিবিধি কী হবে, তা বলা মুশকিল। তবে আজকের চিত্র থেকে বোঝা যাচ্ছে, বাজার এখনো স্থিতিশীলতা ফিরে পায়নি এবং ঝুঁকি এখনো বিদ্যমান।