এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ট্রলড ক্রিকেটার সাব্বির রহমান। পারফরম্যান্সের জন্য যতটা না, তার চেয়ে বেশি ট্রলের শিকার তিনি হচ্ছে মাঠের বাইরের অপকর্মের জন্য। বাংলাদেশ ক্রিকেটের একনিষ্ঠ ভক্ত, যারা চরম দু;সময়েও দল ও ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়ান তারাও নির্দ্বিধায় সাব্বিরকে ট্রল করছেন।
আর ক্রমাগত ব্যর্থতা আর এতোসব ট্রল আর সমালোচনা সাব্বিরকেও যে ছুঁয়েছে এটা গত ম্যাচে তার ক্যাচ মিস থেকেই বোঝা গেছে। অতীতে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও ফিল্ডার হিসেবে বরাবরই দলের অন্যতম সেরা হয়েই ছিলেন তিনি। সর্বশেষ আফগানিস্তান সফরেও যে ম্যাচে মিরাজের সাথে ‘খুনশুটি’ করে বাদ গিয়েছেন, সেদিনও তিনি বদলি ফিল্ডার হিসেবে নেমে কয়েকটি ক্যাচ নিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের একটা বিশাল সংখ্যক মানুষ সফল মানুষদের ব্যর্থতায় পুলকিত হন। তারকার পতন তাদেরকে তৃপ্তি দেয়। আমি নিজে অন্তত কখনই এই দলে ছিলাম না। সাব্বিরের বেলাতেও নেই। বরাবরই আমি সাব্বিরের ব্যাটিং আর ফিল্ডিং এর ভক্ত। সেই আমিও সাব্বিরকে নিয়ে একের পর এক ট্রল করে চলেছি অনায়াসে। কারণ, খুব সাধারণ। সাব্বির তার ভক্তদের সাথে অনায়াসে প্রতারণা করেছেন, করছেন।
মাঠের বাইরে ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আমি বরাবরই অনুৎসাহী। সেটা নারীঘটির বিষয় হোক আর যেটিই হোক। তাই বছর কয়েক আগে বিপিএল চলাকালীন সময়ে সে যখন হোটেল রুমে ‘ফিমেল গেস্ট’ আনার কারণে বিসিবির আর্থিক জরিমানার সম্মুখীন হয়, আমি চুপ ছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে সে যখন ফেসবুক লাইভে এসে ভক্তদের সামনে, ‘আপনাদের কি মনে হয় আমি এমন করতে পারি?’ বলে ‘মশকরা’ করেছে, তখন আমি প্রচন্ড বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ হয়েছি।
এরপর নিজেকে শুধরানো তো দূরের কথা, নতুন নতুন বিতর্ক সে জন্ম দিয়েই চলেছে। মিরাজের সাথে তার গ্যাঞ্জামকেও আমি খুব বড় করে দেখতে নারাজ। একসাথে থাকলে পরিবারের মধ্যে অবশ্যই ছোট-খাটো অনেক রকম ঘটনা ঘটে। মিরাজের সাথে তার মিটমাট হয়ে গেলে আপনি-আমি বলার কেউ না।
কিন্তু চট্টগ্রামে একজন কিশোর দর্শকের উপর চড়াও হয়ে সে নিজেকে চুড়ান্তরকম ‘কাপুরুষ’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। যেটা কোন যুক্তিতেই সমর্থন করার মত নয়।
এছাড়া বিভিন্ন সময় সংবাদমাধ্যমে ৫০০-১০০০ রান বিষয়ক হাস্যকর কথাবার্তা বলে নিজের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও উপহাসের বিষয়বস্তুতে পরিণত করেছেন তিনি।
সর্বশেষ ফেসবুকে দুজন ‘ভক্ত'(অথবা হেটার) কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের অভিযোগ এবং পরবর্তীতে নিজেকে ডিফেন্ড করে ইন্সটাগ্রামে দেয়া তার বক্তব্যের পর একটা বিষয় পরিষ্কার, বাড়াবাড়ির সর্বশেষ সীমা তিনি পার করে ফেলেছেন।
ফর্মে থাকা সাব্বির বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য সম্পদ হতে পারতেন। তিনি তিনি নিজেই নিজের সর্বনাশ ডেকে এনেছেন। আত্মোঃপলব্ধি যদি না হয়, তবে শেষ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটে একটা আক্ষেপ হয়েই থেকে যাবেন।
এতো কিছুর পরেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি২০ দলে তিনি থাকবেন কি না সেটি নিশ্চিত নয়। তবে এতো কিছুর পরেও তার জন্য শুভকামনা থাকবে। অনুতপ্ত হয়ে, নিজেকে বদলে নিয়ে নতুন করে ফিরে আসবেন।
পঞ্চপান্ডবের বিদায়ের পরে বাংলাদেশ দলে একজন পরিণত সাব্বিরকে আমি বরাবরই দেখতে চাইবো। তবে সেই সাব্বিরকে অবশ্যই নিজেকে নতুন করে সাজাতে হবে। মাঠে ও মাঠের বাইরে।
Bangladesh is waiting for India’s mistake
The first of the two-match Test series against India will be played at Chittagong from Wednesday. Earlier, the Test series...