প্রতিনিধি ১৪ অগাস্ট ২০২৫ , ১:৪৩ পিএম প্রিন্ট সংস্করণ
রাজধানীর ভাটারা থানা থেকে বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ফের গ্রেপ্তার হয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়া তারকা প্রিন্স মামুন, যার আসল নাম আব্দুল্লাহ আল মামুন। তার গ্রেপ্তারের খবরটি নিশ্চিত করেছেন ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: রাকিবুল হাসান।
ওসি রাকিবুল হাসান জানান, বিজ্ঞ আদালতের জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার ভোরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে কোন নির্দিষ্ট মামলায় এই পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।
এদিকে, প্রিন্স মামুনের সাবেক স্ত্রী লায়লা আক্তার ফারহাদ এই গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “মামুন গ্রেপ্তার হয়েছে, এটা সত্য। তবে কোন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা আমি নিশ্চিত নই। ওর বিরুদ্ধে তো অনেক মামলাই চলছে।”
প্রিন্স মামুনের গ্রেপ্তারের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। গত বছর জুন মাসে লায়লা আক্তার ফারহাদের দায়ের করা একটি ধর্ষণ মামলায় তাকে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেই সময় এই ঘটনা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।
প্রিন্স মামুন ও লায়লার মধ্যকার দ্বন্দ্ব কেবল ধর্ষণ মামলাতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। তাদের সম্পর্ক এবং তার পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ সোশ্যাল মিডিয়া ও মূলধারার সংবাদমাধ্যমেও যথেষ্ট আলোচিত ছিল। লায়লা আক্তার তার বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে অনলাইনে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর তথ্য প্রচারের অভিযোগ এনেছিলেন। সেই মামলাটিও বেশ কিছুদিন ধরে চলমান ছিল।
তবে গত ১৩ জুলাই ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলম ওই মামলাটি খারিজ করে দেন। ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী জুয়েল মিয়া সংবাদমাধ্যমকে জানান, সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করে নতুন ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ’ জারি করা হয়েছে। নতুন অধ্যাদেশে এই মামলার অভিযোগ সংক্রান্ত ধারা না থাকায় আদালত আবেদনটি খারিজ করে দেন।
প্রিন্স মামুনের পরিচিতি মূলত টিকটক এবং লাইকির মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকেই। নিজের তৈরি করা বিভিন্ন মিউজিক ভিডিও পোস্ট করে তিনি ব্যাপক পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা লাভ করেন। তার এই খ্যাতি তাকে একদিকে যেমন তারকা বানিয়েছিল, তেমনি অন্যদিকে নানা বিতর্ক ও আইনি জটিলতার জন্ম দিয়েছিল।
জনপ্রিয়তা, বিতর্ক, এবং আইনি লড়াই—এই সব মিলিয়েই প্রিন্স মামুনের জীবন এক জটিল আবর্তে পরিণত হয়েছে। তার সাম্প্রতিক গ্রেপ্তার আবারও প্রমাণ করে, জনপ্রিয়তার ঝলকানির পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে আইনি জটিলতা এবং ব্যক্তিগত জীবনের নানা সমস্যা। তবে নতুন করে গ্রেপ্তারের পেছনে ঠিক কী কারণ, তা জানতে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।