প্রতিনিধি ২০ অগাস্ট ২০২৫ , ১১:১২ এএম প্রিন্ট সংস্করণ
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে সফল শো করে দেশে ফিরেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। আমেরিকা সফরের অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করে তার নতুন সিনেমার পরিকল্পনা, ক্যারিয়ারের বাঁকবদল এবং ট্রল মোকাবিলা নিয়ে কথা বলেছেন এই তারকা।
আমেরিকার মঞ্চে মুগ্ধ দীঘি
পেনসিলভানিয়া, টেক্সাস ও মিশিগানের মতো তিনটি অঙ্গরাজ্যের ভিন্ন ভিন্ন শহরে শো করেছেন দীঘি। তার অভিজ্ঞতা ছিল অসাধারণ। তিনি জানান, প্রতিটি শহরেই বাঙালি কমিউনিটি অনেক বড় এবং তাদের ভালোবাসা ছিল মুগ্ধ করার মতো। বিশেষ করে মিশিগানে প্রায় ২০ হাজার দর্শকের সামনে পারফর্ম করার অভিজ্ঞতা তাকে আপ্লুত করেছে। শো’র ফাঁকে বাফেলোতে তার খালার বাড়িতে ঘুরে সময় কাটিয়েছেন। দীঘি বলেন, “বাংলাদেশের কোনো শো হলে সেসব অঙ্গরাজ্যের দূরদূরান্ত থেকে বাঙালিরা আনন্দ নিয়ে ছুটে আসে, এটা জেনে আমার খুবই ভালো লেগেছে।”
নতুন সিনেমার খবর: প্রেমের গল্পের দিকে ঝোঁক
দীর্ঘদিন ধরে বড় পর্দায় দীঘির নতুন কোনো খবর ছিল না। তবে এবার সুখবর দিলেন এই অভিনেত্রী। তিনি জানান, বর্তমানে চার থেকে পাঁচটি সিনেমা নিয়ে কথা চলছে। বেশিরভাগ প্রস্তাবই প্রেমের গল্পের। দীঘি বলেন, “এখন মানুষ আবারও ভালোবাসার গল্প দেখতে চাইছে, তাই প্রেমের গল্পের দিকে আমার ঝোঁক বেশি।” তবে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে এখনই কোনো কাজ করছেন না তিনি, কারণ তার পছন্দমতো কোনো চিত্রনাট্য এখনো ব্যাটে-বলে মেলেনি।
‘জংলি’ ছবির সাফল্য নিয়ে কথা
গত ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাওয়া সিয়ামের বিপরীতে অভিনীত ‘জংলি’ ছবিটি নিয়ে দীঘি তার সন্তুষ্টির কথা জানান। শুরুতে তিনি ভেবেছিলেন দর্শকরা শুধু ‘জংলি’ এবং ‘পাখি’ চরিত্র নিয়েই আলোচনা করবে। কিন্তু সিনেমা মুক্তির পর তার ধারণা পাল্টে যায়। দর্শকরা ‘নূপুর’ চরিত্রে তার অভিনয় নিয়েও প্রশংসা করেছে, যা তার প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ছিল। সিয়ামের সঙ্গে নতুন কোনো ছবিতে অভিনয়ের খবর সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখনো নিশ্চিত কিছুই হয়নি, তবে আশা করি ভালো কিছুই হবে। সিয়ামের সঙ্গে আবার কাজ করা মন্দ হবে না।”
শিশুশিল্পী থেকে নায়িকা: ভিন্ন অভিজ্ঞতা
শিশুশিল্পী হিসেবে তার অভিজ্ঞতা এবং এখনকার অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ ভিন্ন বলে জানান দীঘি। ছোটবেলায় তিনি না বুঝেই কাজ করতেন, সবাই তাকে আদর করত। এখনকার অভিজ্ঞতা অনেক পরিণত। এখন তিনি পোস্ট-প্রোডাকশন থেকে শুরু করে সব কিছুতেই যুক্ত থাকেন। টিমের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা অনেক বেশি, তাই এই অভিজ্ঞতাকে তিনি ভিন্ন চোখে দেখেন। নায়িকা হিসেবে তিনি রোমান্টিক-ড্রামা ঘরানার চরিত্রে নিজেকে সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তবে তিনি চ্যালেঞ্জ নিতেও প্রস্তুত। দীঘি বলেন, “আমি চাই সবাই আমাকে কমফোর্ট জোন থেকে বের করে নিয়ে আসুক এবং আমাকে নতুন সব চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ দিক।”
ট্রল মোকাবিলা: নেতিবাচকতাকে শক্তিতে রূপান্তর
তারকাদের নিয়ে সমালোচনা বা ট্রল হওয়া প্রসঙ্গে দীঘি জানান, একসময় তিনি এসব নিয়ে মন খারাপ করতেন এবং ভেঙে পড়তেন। পরে তিনি বুঝতে পারেন, সব সফল মানুষেরই হেটার্স বা সমালোচক থাকে। তিনি বলেন, “যারা ট্রল করে, তারা আসলে খুবই অসফল, হতাশাগ্রস্ত এবং সফলদের দেখে তাদের ঈর্ষা হয়। তাদের কথাকে আমি এখন আমার শক্তি হিসেবে ব্যবহার করি।”
সবকিছু মিলিয়ে প্রার্থনা ফারদিন দীঘি এখন তার নতুন কাজ এবং ক্যারিয়ারের নতুন অধ্যায় নিয়ে দারুণভাবে আশাবাদী।