অর্থনীতি

সোনার দামে অস্থিরতা: ১ লাখ ৭১ হাজার টাকায় স্থির, তবে কি আবারও বাড়বে?

  প্রতিনিধি ২৪ অগাস্ট ২০২৫ , ১২:৩১ পিএম প্রিন্ট সংস্করণ

সোনার দামে অস্থিরতা: ১ লাখ ৭১ হাজার টাকায় স্থির, তবে কি আবারও বাড়বে?

জুলাই মাস জুড়ে সোনার বাজারে ছিল এক অস্থির পরিস্থিতি। দফায় দফায় বাড়ার পর অবশেষে দাম কিছুটা কমেছে, আর বর্তমানে তা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। এই স্থিতিশীলতা কতটা স্থায়ী, তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনা বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৬০১ টাকায়।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) গত ২৪ জুলাই সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দেয়। এক বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস জানায়, প্রতি ভরিতে সোনার দাম ১ হাজার ৫৭৪ টাকা কমানো হয়েছে। এর ফলে, ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার নতুন দাম দাঁড়ায় ১ লাখ ৭১ হাজার ৬০১ টাকা। একই সঙ্গে, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা ১ লাখ ৬৩ হাজার ৭৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৪০ হাজার ৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনা ১ লাখ ১৬ হাজার ১২৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এই দাম সমন্বয় করা হয়েছিল এর আগের দিনের দাম বাড়ানোর ঘোষণার পর। গত ২৩ জুলাই বাজুস প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম ১ হাজার ৫৭৪ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৭৩ হাজার ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করেছিল। তখন ২১ ক্যারেট সোনা ১ লাখ ৬৫ হাজার ৩০২ টাকায়, ১৮ ক্যারেট সোনা ১ লাখ ৪১ হাজার ৬৮৩ টাকায় এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা ১ লাখ ১৭ হাজার ২২৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত সোনার বাজারে এক নতুন পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।

সোনার দামের এই ওঠানামা নতুন কিছু নয়। আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভর করে দেশীয় বাজারে প্রায়ই সোনার দাম পরিবর্তিত হয়। তবে, সাধারণ মানুষের জন্য এই দ্রুত পরিবর্তন অনেক সময় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষত যারা গহনা কিনতে বা বিনিয়োগ করতে চান, তাদের জন্য এই অস্থিরতা সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন করে তোলে।

গহনা কেনার ক্ষেত্রে শুধু সোনার দামই শেষ কথা নয়। বাজুস জানিয়েছে, সোনার বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং বাজুস-নির্ধারিত ৬ শতাংশ ন্যূনতম মজুরি যোগ করতে হয়। মজুরির পরিমাণ গহনার ডিজাইন এবং মানের ওপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে। তাই, সোনার গহনা কেনার সময় ক্রেতাদের এই অতিরিক্ত খরচগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা প্রয়োজন।

অন্যদিকে, সোনার দাম কমলেও রুপার দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি। দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা এখনো ২ হাজার ৮১১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রুপার দাম স্থিতিশীল থাকায় অনেক ক্রেতা সোনার পরিবর্তে রুপার গহনার প্রতি আগ্রহী হতে পারেন।

বর্তমানে সোনার দাম ১ লাখ ৭১ হাজার ৬০১ টাকায় স্থিতিশীল থাকলেও ভবিষ্যতে এই দামের গতিবিধি কী হবে, তা বলা কঠিন। আন্তর্জাতিক বাজারের পরিস্থিতি, ডলারের বিনিময় হার এবং বিশ্ব অর্থনীতির ওঠানামা—এসবের ওপরই নির্ভর করছে সোনার ভবিষ্যৎ। সোনার দামে অস্থিরতা আবারও ফিরে আসবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে।